দূষণ কমাতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাচ্ছে দিল্লি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:৩৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীত মৌসুমের সূচনাতেই ঘন ধোঁয়াশা ও দূষণে নাকাল মানুষ। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে দিল্লি সরকার—আকাশে মেঘ বীজায়নের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
আকাশে ছুটছে কেমিক্যালবাহী বিমান
প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) কানপুর’-এর সহযোগিতায় বুরারি অঞ্চলের আকাশে একটি সেসনা বিমান থেকে বিশেষ রাসায়নিক ছিটিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষার লক্ষ্য ছিল—বৃষ্টি সৃষ্টিতে সক্ষম মেঘে কৃত্রিম প্রভাব ফেলে দূষণকণা ধুয়ে ফেলা।
দিল্লির মন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা জানান, ‘এই ফ্লাইটটি ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষামূলক অভিযান। এতে মেঘ বপনের সক্ষমতা, বিমান প্রস্তুতি, এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয় যাচাই করা হয়েছে।’
২৯ অক্টোবরেই কৃত্রিম বৃষ্টি?
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ২৯ অক্টোবর প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো হবে।
তবে কোন রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট করেননি তিনি।
বিশ্বের অন্যতম দূষিত রাজধানী
নয়াদিল্লি প্রায় তিন কোটি মানুষের শহর, যা নিয়মিতভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীগুলোর তালিকায় শীর্ষে থাকে। শীতকালে বাতাসে ভেসে থাকা ধোঁয়া, ফসল পোড়ানো, কারখানার ধোঁয়া ও যানবাহনের নির্গমনে বায়ুমণ্ডলে বিপজ্জনক পিএম ২.৫ কণার ঘনত্ব অনেক সময় জাতিসংঘের নির্ধারিত সীমার ৬০ গুণ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
দীপাবলির পর দূষণ বৃদ্ধি
দীপাবলি উৎসবের পর টানা কয়েকদিন ধরে আতশবাজি ব্যবহারের ফলে এই সপ্তাহে পিএম ২.৫-এর ঘনত্ব সীমার ৫৬ গুণ ছাড়িয়ে গেছে।
যদিও সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ‘সবুজ আতশবাজি’ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে—যা তুলনামূলকভাবে কম দূষণকারী।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে দিল্লির কিছু এলাকায় পিএম ২.৫-এর ঘনত্ব ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১৫৪ মাইক্রোগ্রাম—যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সীমার প্রায় ১০ গুণ বেশি।
প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান না সাময়িক প্রচেষ্টা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বৃষ্টি বায়ুমণ্ডলের ধুলিকণা ও দূষণকণা সাময়িকভাবে ধুয়ে ফেলতে পারে, তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়। স্থায়ীভাবে বায়ুদূষণ কমাতে প্রয়োজন শিল্প-নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের নির্গমন হ্রাস, এবং কৃষিক্ষেত্রে অবৈধ ফসল পোড়ানো বন্ধ করা।
