বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

‘পরিবেশ আদালত আইন’ সংশোধনের আহ্বান ৯ পরিবেশ ও উন্নয়ন সংগঠনের 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:৪৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০১:৫৪, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

‘পরিবেশ আদালত আইন’ সংশোধনের আহ্বান ৯ পরিবেশ ও উন্নয়ন সংগঠনের 

নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের বিদ্যমান ‘পরিবেশ আদালত আইন’ সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে ৯টি পরিবেশ ও উন্নয়ন সংগঠন।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশ আদালত আইন সংশোধন আজ একটি অতি জরুরি বিষয়। বিদ্যমান পরিবেশ আইনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো পরিবেশ আদালত আইনে মামলা করা যায় না। বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষায় যে পরিমাণ রীট হয়েছে, কিন্তু তার চেয়ে কয়েকগুন কম  মামলা হয়েছে পরিবেশ আদালতে। এতেই প্রমাণিত হয় পরিবেশ আদালত আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ রোগাক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করছে। এমতবস্থায় পরিবেশ আদালত আইনে সরাসরি মামলা দায়েরের অধিকার না থাকা, নাগরিক অধিকার হরণের সামিল। এটি এই আইনগুলোর একটি বড় দূর্বলতা, যার ফলে নাগরিক কাঙ্ক্ষিত প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই দুর্বলতা দূর করা অতি জরুরি। আইনগুলো প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সাথে জনগন এবং পরিবেশ কর্মীদের সম্পৃক্ততা না থাকায় আইনগুলো যথাযথ জনবান্ধব হয়ে ওঠেনি।  

সোমবার (১৩ অক্টোবর) এই যৌথ বিবৃতি দেয়- পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স, পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজের (বারসিক), ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), খিলগাও আবাসিক এলাকা পরিবেশ রক্ষা কমিটি (কেপিআরসি), ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ) এবং আর্থ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিবেশ আদালত আইনে নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার অধিকার নেই, অপর দিকে পরিবেশ আইনে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক জরিমানার কোন সুযোগ নেই। ফলে একদিকে নাগরিক মামলা করতে পারছে না, আর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযোগ পেলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। বিবৃতিতে পরিবেশ ও উন্নয়নকর্মীরা জানান, দেশে ১৭ কোটি মানুষের জন্য মাত্র দুটি পরিবেশ আদালত। পরিবেশ রক্ষায় নানা আলোচনা হলেও, মৌলিক বিষয়ে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।  ‘পরিবেশ আদালত আইন’ এবং ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন’ সংশোধন করা না হলে দেশের পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হবে না। আইন দুটি সংশোধনের ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক, ভৌগলিক এবং মানুষের রীতিনীত ঐতিহ্য বিষয়ক বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। 

বিবৃতিতে বলা হয়, পরিবেশ সংরক্ষন আইনে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা প্রদান, পরিবেশ রক্ষায় ফোর্স গঠন এবং পরিবেশ আদালত আইনে নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিবেশ আইন সংশোধনের পাশাপাশি টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন নিশ্চিত করা সময়ের দাবী। পরিবেশ অধিদপ্তরের ওপর মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক প্রভাব অধিদপ্তরের স্বাধীন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে। এই ধরণের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব আইনের কার্যকর বাস্তবায়নকে ব্যবহত করে যা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।  পাশাপাশি পরিবেশ আদালতে পরিবেশ-বিশেষজ্ঞ এবং বিচারকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে পরিবেশ আদালত পরিবেশ সুরক্ষায় আরো বেশি অবদান রাখতে পারবে। পরিবেশ দূষণের আংশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা এবং ঘটনাস্থলে জরিমানা আরোপের ক্ষমতা প্রদান করা হলে পরিবেশ রক্ষা আইন আরো কার্যকর অবদান রাখতে পারবে। এছাড়া আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগন এবং পরিবেশ কর্মীদের ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করা এবং মতামত নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে সংশোধিত আইনে কিছু বিধান সংযুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো- আইন প্রয়োগে পরিবেশ ফোর্স ইউনিট স্থাপন করতে আনসার বাহিনীর সদস্যদের ফোর্স হিসেবে সম্পৃক্ত করা, অভিযোগ নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক করা, পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের বিধান স্পষ্ট করা, ক্ষতিপূরণ ও শাস্তির পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে বা অবস্থার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের ব্যাংক হিসাব স্থগিত, ইউিটিলিটি সার্ভিস বন্ধ করার ক্ষমতা প্রদান, পরিবেশদূষণকারীদের লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলের ক্ষমতা প্রদান। 

বিবৃতিতে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো- নাগরিকদের মাঝে আইনের সচেতনা বৃদ্ধি জোরদার করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে; সচেতনতা, গবেষণা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ইত্যাদি কাজ কমিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে একটি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থায় পরিণত করতে হবে; সরকারী প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও জবাবদিহীতার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংক্রান্ত কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করতে হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

পুয়ের্তো রিকোর জালে মেসির আর্জেন্টিনার ৬ গোল
স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বিতর্কে তোলপাড়
চাকসু নির্বাচন অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ
রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের আগুন গার্মেন্টসের দ্বিতীয় তলা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনিসিপিকে প্রতীক নিতে হবে
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ভারতের ৩ কফ সিরাপ: ডব্লিউএইচও
বুধবার থেকে শুরু অনলাইন জামিননামা প্রক্রিয়া
শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান
আগামী রবিবার থেকে মাসব্যাপী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান শুরু