বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

‘ইনহেলার’ থেকেই অর্ধলক্ষাধিক গাড়ির সমান কার্বন নিঃসরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

প্রকাশ: ২০:০৭, ৭ অক্টোবর ২০২৫

‘ইনহেলার’ থেকেই অর্ধলক্ষাধিক গাড়ির সমান কার্বন নিঃসরণ

মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস বাঁচাতে তৈরি ইনহেলার এখন নিজেই হয়ে উঠছে জলবায়ুর জন্য হুমকি। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত ইনহেলারগুলো থেকে প্রতি বছর যত পরিমাণ কার্বন নির্গত হয়, তা প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার গাড়ির সমান—সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (ইউসিএলএ) ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত তিন ধরণের ইনহেলারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এই যন্ত্রগুলো থেকে মোট ২৪.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড সমতুল্য গ্যাস নির্গত হয়েছে। এই গবেষণা সোমবার জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এ প্রকাশিত হয়।

‘পাফার’ সবচেয়ে ক্ষতিকর
সবচেয়ে বেশি দূষণ ঘটাচ্ছে মিটারড-ডোজ ইনহেলার বা ‘পাফার’। এগুলোতে ওষুধ পাঠানো হয় হাইড্রোফ্লুরোঅ্যালকেন নামের গ্যাসের মাধ্যমে, যা একধরনের শক্তিশালী গ্রীনহাউস গ্যাস। এসব ইনহেলারই মোট নির্গমনের ৯৮ শতাংশের জন্য দায়ী।
অন্যদিকে, ড্রাই-পাউডার ও সফট-মিস্ট ইনহেলার তুলনামূলক অনেক পরিবেশবান্ধব—এগুলো কোনো প্রপেলান্ট গ্যাস ছাড়াই কাজ করে।

গবেষক ও পালমোনোলজিস্ট ড. উইলিয়াম ফেল্ডম্যান বলেন,“প্রতি বছর ৫ লক্ষাধিক গাড়ির সমান নির্গমন কেবল ইনহেলার থেকেই আসছে—এটা গুরুতর বিষয়। অথচ এটি খুব সহজেই সমাধানযোগ্য।”
তিনি জানান, খুব কম রোগীরই আসলে পাফার ইনহেলারের প্রয়োজন হয়। শিশু ও দুর্বল বৃদ্ধদের জন্য এটি অপরিহার্য হলেও, বেশিরভাগ রোগী চাইলে বিকল্প ইনহেলার ব্যবহার করতে পারেন।
ড. ফেল্ডম্যানের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশবান্ধব ইনহেলার কম ব্যবহারের কারণ মূলত বীমা ও বাজার-সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা।
‘অ্যালবিউটেরল’-এর ড্রাই-পাউডার সংস্করণ থাকলেও তা অধিকাংশ বীমায় অন্তর্ভুক্ত নয়, ফলে দাম বেশি। ইউরোপে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ‘বুডেসোনাইড-ফর্মোটেরল’ ড্রাই-পাউডার ইনহেলারটি যুক্তরাষ্ট্রে এখনও পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন,“রোগীদের দোষারোপ নয়, বরং নীতিনির্ধারকদের উচিত এই ওষুধগুলোকে টেকসইভাবে সবার নাগালে আনা।”

গবেষণাটির সঙ্গে প্রকাশিত JAMA-এর আরেক মন্তব্যে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেকজান্ডার রাবিনসহ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, কম নির্গমনকারী ইনহেলারের দাম যেন সাশ্রয়ী হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নতুন কম-দূষণকারী ইনহেলারগুলো যদি কেবল উচ্চমূল্যের ব্র্যান্ড পণ্য হিসেবে বাজারে আসে, তবে বীমাহীন বা নিম্নবীমার রোগীরা পিছিয়ে পড়বেন।
গবেষণাটি দেখাচ্ছে, স্বাস্থ্যসেবার মধ্যেও জলবায়ু পরিবর্তনের দায় লুকিয়ে আছে। ইনহেলারের মতো ক্ষুদ্র যন্ত্রও বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে পরিবেশে। তাই চিকিৎসা প্রযুক্তিতে ‘গ্রিন ট্রানজিশন’ এখন সময়ের দাবি—যাতে রোগী ও পৃথিবী দুটোই বাঁচে। সূত্র : আলজাজিরা

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে বসছে ঐকমত্য কমিশন
আমি নিজেই পিআর বুঝি না: মির্জা ফখরুল
অক্টোবরে বাড়ছে ট্রিপ সংখ্যা রবিবার থেকে ১ ঘন্টা বেশি চলবে মেট্রোরেল
সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে সই করবে: আইন উপদেষ্টা
ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ অবরোধ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের
পুয়ের্তো রিকোর জালে মেসির আর্জেন্টিনার ৬ গোল
স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বিতর্কে তোলপাড়
চাকসু নির্বাচন অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ
রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের আগুন গার্মেন্টসের দ্বিতীয় তলা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনিসিপিকে প্রতীক নিতে হবে
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ভারতের ৩ কফ সিরাপ: ডব্লিউএইচও
আগামী রবিবার থেকে মাসব্যাপী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান শুরু