রাজশাহীতে বিএনপির নারী কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন, দ্রুত বিচার দাবি
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:০৫, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:০৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
রাজশাহীর পবা উপজেলায় বিএনপির দুই নারী কর্মীকে মারধরের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহিত
রাজশাহীর পবা উপজেলায় বিএনপির দুই নারী কর্মীকে মারধর ও হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারী অধিকার কর্মীরা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ‘সচেতন নারী সমাজ’ এর ব্যানারে মানববন্ধন আয়োজন করে রাজশাহী নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের আশরাফের মোড় এলাকায় বিএনপির কর্মী নিলুফার ইয়াসমিন ও তার বোন নূরভানুকে মারধর ও হেনস্তা করার অভিযোগ করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি নুরুল ইসলাম, যিনি স্থানীয়ভাবে জামায়াতের কর্মী হিসেবে পরিচিত। ঘটনাটি নিয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এবং বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।
পরে শুক্রবার স্থানীয় নারী অধিকার কর্মীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী–৩ (পবা–মোহনপুর) আসনের দলীয় প্রার্থী শফিকুল হক (মিলন) বলেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন চলতে শুরু করেছে। কিন্তু রাজশাহীর এই ঘটনাটি সেই ট্রেনকে কিছুটা হলেও থামানোর চেষ্টা করেছে। নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে। যারা নারীদের হেনস্তা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিবা বলেন, ‘আমরা শুধু একজন নারীর ওপর হামলার প্রতিবাদ করছি না; আমরা প্রতিবাদ করছি সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, যেখানে একজন পুরুষ রাজনৈতিক পরিচয় দেখিয়ে নারীকে মারধর করতে পারে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যে পা আমার বোনের দিকে উঠেছে, সেই পা আইনের মাধ্যমেই ভেঙে দেওয়া হবে।’
মহিলা দলের রাজশাহী মহানগরের সভাপতি শামসাদ মিতালী বলেন, ‘দেশের ৫২ শতাংশ ভোটার নারী। কিন্তু যেভাবে আমাদের নেত্রী নিলুফার ও তাঁর বোনের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, তা নারীর নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের বড় ধরনের ব্যর্থতার প্রমাণ।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বিচার না পেলে দেশজুড়ে নারীরা আরও কঠোর আন্দোলনে নামবে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলিম বলেন, ‘যখন নারীরা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন রাজনৈতিক পরিচয়ে তাদের নির্যাতন আমাদের সমাজকে পিছনে ঠেলে দেবে। দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার প্রয়োজন।’
ইউট্যাবের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক মামুনুর রশীদ ঘটনাটিকে ‘অকল্পনীয়’ উল্লেখ করে বলেন, ‘নারীদের ওপর সহিংসতা রোধ করতে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে উদ্দেশ্য করে ‘আমার বউ নৌকায় ভোট দিছে’ বলে কটূক্তি করায় আমি ক্ষুব্ধ হয়ে শুধু ধাক্কা দিয়েছি। এর বেশি কিছু হয়নি।’
বিষয়টি নিয়ে কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, ‘ঘটনার জিডি আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।’
