নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তে বিকট বিস্ফোরণ
কেঁপে উঠলো চেরার মাঠ, আতঙ্কে স্থানীয়রা
উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:১১, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চেরার মাঠ এলাকায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে দুই দফা বিকট বিস্ফোরণের শব্দে পুরো সীমান্ত অঞ্চল কেঁপে ওঠে। দুপুর ১টা ৪৩ মিনিট ও ১টা ৪৬ মিনিটে তিন মিনিটের ব্যবধানে ঘটে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ, যা শুনে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সীমান্তের ওপার থেকেই শব্দ
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের উৎস ছিল মিয়ানমার সীমান্তের খুব কাছাকাছি ৪৪ নম্বর সীমান্ত পিলার সংলগ্ন এলাকা।
চেরার মাঠ এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক মো. আইয়ুব সমাজকালকে বলেন, “এত জোরালো বিস্ফোরণের আওয়াজ আমার জীবনে শুনিনি। এটা নিশ্চিতভাবেই সীমান্তের ওপার থেকে এসেছে।”
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম, দুই দফা ভয়ংকর শব্দ শুনি। পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে, অনেকে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে।”
স্থানীয়দের ধারণা, মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অংশটি বর্তমানে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ চলছে। বাসিন্দা মোহাম্মদ ফয়েজ ও ইব্রাহিম জানান, “ওই অঞ্চলে আরাকান আর্মির সদস্যরা স্থলমাইন পুঁতে রাখে বলে শোনা যায়। হয়তো কোনো প্রাণী বা চোরাকারবারির পায়ে লাগায় এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
তবে বিস্ফোরণের পর থেকেই চেরার মাঠ ও আশপাশের গ্রামগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বাইরে যেতে নিষেধ করছেন, অনেকে স্থানীয় বাজার বন্ধ রেখেছেন।
গত কয়েক মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তজুড়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কারণে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ সার্বক্ষণিক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সীমান্তের ওপার থেকে প্রায়ই গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে, মাঝে মাঝে গুলির গুল্মবৃষ্টি পর্যন্ত দেখা যায় বলে দাবি স্থানীয়দের।