মানিকগঞ্জে পৃথক স্থানে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:২১, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

মানিকগঞ্জ সদর ও ঘিওর উপজেলায় পৃথক স্থানে তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সদর উপজেলার পশ্চিম দাসড়া এলাকায় এক বহুতল ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে আবু হানিফ (৩০) নামের এক আদম ব্যবসায়ীর মরদেহ।
পুলিশ জানায়, সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল সদর ভূমি অফিসের পেছনের ওই ভবনে যায়। সেখানে দরজা বন্ধ অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখা যায় হানিফকে। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত আবু হানিফ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুমার ডোগা গ্রামের নূর আহাম্মেদের ছেলে। পেশায় তিনি আদম ব্যবসায়ী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করতেন হানিফ। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও ছিল। ২০২৩ সালে হানিফের সঙ্গে বৃষ্টি আক্তার নামে এক নারীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সোমবার সকালে সাবেক স্ত্রীর দেওয়া মোটরসাইকেল বিক্রির ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে গেলে অন্য পাওনাদাররাও সেখানে উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে হানিফ বৃষ্টির ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে পাশের ভবনের জানালা দিয়ে দেখা যায়, তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম সমাজ কালকে বলেন,‘সদর ভূমি অফিসের পেছনের ভবন থেকে আবু হানিফ নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
একই দিন সকালে ঘিওর উপজেলার দেওভোগ গ্রামে সোনামিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে নিজ বাড়ির পাশে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোহিনূর মিয়া জানান, ‘প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন সোনামিয়া। তাই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এদিকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, নিহত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির।
সবগুলো মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পৃথক তিনটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।