আসামি ধরতে গিয়ে অস্ত্র খোয়া, বরখাস্ত ৬ পুলিশ
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৫৬, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:০৩, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ফেনীর সোনাগাজীতে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র খোয়ানোর ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্যকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোনাগাজী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ মুমিদ রায়হান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
বরখাস্ত হওয়া সদস্যরা হলেন সোনাগাজী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাইদুর রহমান ও মোফাজ্জল হোসেন, কনস্টেবল মাহবুব আলম, আইনুল করিম, কাঞ্চন ও হৃদয়। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের ফেনী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর ভোরে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জাহেদুল ইসলাম রিপন ও রফিকুল ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তারের জন্য একটি দল অভিযানে যায়। অভিযান চলাকালে আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পুলিশের কাছ থেকে একটি শটগান ও একটি ওয়াকি-টকি ছিনিয়ে নেয় তারা এবং দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে পুলিশ ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জাহেদুল ইসলাম রিপন, তার বোন সাবিনা ইয়াসমিন এবং ভাইয়ের স্ত্রী নিশু।
এদিকে আসামি পরিবারের দাবি, পুলিশ ষড়যন্ত্র করে মামলায় জড়িয়েছে। রিপনের বোন রোকসানা আক্তার বলেন, আমার ভাই ডাকাত নয়, নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। সেদিন বাড়িতে বৃদ্ধ মা, দুই ভাই, বোন ও ভাবি ছাড়া কেউ ছিল না। ছয়জন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তারা কীভাবে সংঘর্ষে জড়াতে পারে? পুরো ঘটনাই সাজানো।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, জাহেদুল ইসলাম রিপন ও রফিকুল ইসলাম আরিফের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ওইদিন ছয় পুলিশ সদস্য হাসপাতালে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাদের আঘাত গুরুতর ছিল না, সামান্য হাতাহাতির কারণে তারা চিকিৎসা নেন এবং পরে ফিরে যান।
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা শুধু আসামি ধরতে পারেননি, বরং অস্ত্র ও ওয়াকি-টকি ফেলে চলে এসেছেন। এটি স্পষ্ট অযোগ্যতা, তাদের এ ব্যর্থতার দায় নিতে হবে।