রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

| ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

চুয়াডাঙ্গায় স্ক্যাবিসের ভয়াবহ বিস্তার

প্রতিদিন ১৫০ রোগী আক্রান্ত, ওষুধে সংকট

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭:৫৬, ৮ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিদিন ১৫০ রোগী আক্রান্ত, ওষুধে সংকট

চুয়াডাঙ্গায় আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক চর্মরোগ স্ক্যাবিস (খোস-পাঁচড়া)। শিশু, নারী ও বয়স্ক—সব বয়সী মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন এই ত্বকজনিত ব্যাধিতে। বিশেষ করে এক পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অল্প সময়েই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পরিবারে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। নতুন ও পুরোনো ভবনের দ্বিতীয় তলার করিডোর, বারান্দা ও চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত রোগী। হাসপাতালের কর্মীরা ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী স্ক্যাবিস ও খোস–পাঁচড়াসহ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে।

চিকিৎসা নিতে আসা ইমরান নামে এক রোগী জানান, `দুই মাস আগে আঙুলে চুলকানি শুরু হয়, পরে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে। কয়েক দফা হাসপাতালে এসেছি, ডাক্তার ওষুধ দিচ্ছেন, কিন্তু তা বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।‘

আরেক রোগী তানহা, যিনি স্থানীয় এক মাদরাসার ছাত্র, বলেন, `দুই হাতের কনুইয়ের ভাঁজে চুলকানি, এখন অনেক বেড়ে গেছে। আমার আরও কয়েকজন সহপাঠীরও একই সমস্যা।‘

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারাও একইভাবে ভোগান্তির শিকার। কেউ কেউ বলছেন, প্রথমে একজন আক্রান্ত হলেও দ্রুত তা পরিবারের অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. লাইলা শামীমা শারমিন বলেন, `স্ক্যাবিস খুব দ্রুত সংক্রমিত হলেও এটি প্রতিরোধযোগ্য। আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে পরিবারের সদস্যদেরও একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে, না হলে সংক্রমণ আবার ফিরে আসে।‘

তিনি আরও জানান, গরম ও বর্ষাকালে এই রোগের প্রকোপ বেশি থাকে। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ায় সঠিক চিকিৎসা হয় না, ফলে জটিলতা বেড়ে যায়। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে কিডনি ও ত্বকের জটিলতা দেখা দিতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস জানান, `স্ক্যাবিস ও দাউদ—দুটিই অত্যন্ত সংক্রামক রোগ। বর্তমানে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে। আজও ১৫০ জনের বেশি রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। স্ক্যাবিসের জন্য যে তরল ওষুধ তা সংকটে আছে, তবে দ্রুত সমাধান হবে।‘

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার এই স্ক্যাবিস প্রাদুর্ভাব এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা, পরিচ্ছন্নতা এবং পরিবারভিত্তিক সচেতনতা—এই তিনটি বিষয়ই এখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক চায় ভারত: প্রণয় ভার্মা
নির্বাচনে ৮৯% সাংবাদিক নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায়: জরিপ
১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেডিকেল কোচিং সেন্টার বন্ধ
৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ : বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ভারত ও ভুটান
জুলাই আন্দোলনের অজ্ঞাত ১১৪ শহীদের পরিচয় শনাক্তে সিআইডির উদ্যোগ
জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
সেন্টমার্টিন থেকে ১৮৫০ কেজি বর্জ্য অপসারণ করল কেওক্রাডং
বিএনপি ‘প্রতিশ্রুতির রাজনীতিতে’ বিশ্বাসী: রিজভী
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত
সিএমপির সব থানার ওসি রদবদল
যে কারণে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছি
৬৪ জেলায় ৬৪ বন্যপ্রাণী কর্মীকে স্বীকৃতি দেবে সরকার
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তফসিল চূড়ান্ত
ডোনাল্ড ট্রাম্প পেলেন ‘ফিফা শান্তি পুরস্কার’
খালেদা জিয়ার সফল এন্ডোস্কোপি
এখনও তফশিল ও ভোটের তারিখ চুড়ান্ত হয়নি: ইসি সচিব
ঠাকুরগাঁও এবারও হলো না দুই বাংলার মানুষের প্রতীক্ষিত মিলনমেলা
ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে তরুণরাই সামনে থাকে: আসিফ নজরুল
আবারও বাড়লো সোনার দাম
খালেদার অসুস্থতায় নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিকতা নেই: আমীর খসরু