স্ত্রীকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা, স্বামীসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:২৪, ৭ অক্টোবর ২০২৫

বরগুনায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার দায়ে স্বামীসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের কবির তালুকদার (৫৯), তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচী বেগম (৫০) এবং জামাতা মো. সুজন (৩০)। আদালত তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রথম স্ত্রী মহিমা বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন কবির তালুকদার। একপর্যায়ে তিনি মেয়ে রেখা বেগমের (২২) শাশুড়ি এলাচী বেগমের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় মেয়ের প্রতিবাদে পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং পরে রেখা আত্মহত্যা করেন।
এরপর কবির তালুকদার ওই এলাচী বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই মহিমা বেগমের ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।
২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে কবির তালুকদার ছেলে হেলাল তালুকদারকে (২৭) বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে যৌতুক ও সম্পত্তি বিক্রির দাবিতে মহিমা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। রাজি না হওয়ায় কবির, এলাচী ও জামাতা সুজন মিলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন।
পরদিন (২৬ অক্টোবর ২০১৯) হেলাল তালুকদার পাথরঘাটা থানায় মামলা করেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বাদী হেলাল তালুকদার বলেন, “মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি হওয়ায় আমি আইনকে শ্রদ্ধা জানাই। রায়ে আমি সন্তুষ্ট।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলি রঞ্জুআরা শিপু বলেন, “সাক্ষ্য–প্রমাণে হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এই রায়ের মাধ্যমে সমাজে নারীর ওপর নির্যাতনের মতো অপরাধ কমে আসবে।”