চাকরিচ্যুত ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তারা আন্দোলনে
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১৪:৪৩, ৪ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট এলাকায় শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের চার শতাধিক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। চাকরিতে পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়। সকাল ১১টার দিকে মানববন্ধনের পর বেলা পৌনে ১২টায় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন, ফলে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
অবরোধে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা বিনা কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন এবং আরও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তা ওএসডি (Officer on Special Duty) করে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে অনেক পরিবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে, আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তারা।
এর আগে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে রবিবার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনরত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন,“আমাদের প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আরও পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,“চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও ওএসডি প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি।”
অপর এক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন,“ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। বেতনের টাকা তুলতে পারছি না, আইডি কার্ডও ব্লক করা হয়েছে। আমরা এখন পথে বসে গেছি।”
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের ছয় দফা দাবি
১. বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষার বয়কটের কারণে দেওয়া ‘পানিশমেন্ট ট্রান্সফার’ বন্ধ করতে হবে।
৩. বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে নেওয়া সব ধরনের অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
৬. পরীক্ষা বর্জনের ঘটনায় করা জিডি ও সাইবার ক্রাইমের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ফৌজদারহাট থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত রাস্তার উভয় দিকেই যানজট ছড়িয়ে পড়েছে, এবং এতে ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।