বহিরাগত দিয়ে দেশীয় ও অটোম্যাটিক অস্ত্রে হামলার অভিযোগ সেনা রিজিয়ন কমান্ডারের
প্রকাশ: ১৫:০২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ মঙ্গলবার ব্রিফিং করেন
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে সরাসরি দায়ী করেছেন সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও শিক্ষার্থীদের সামনে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে সংগঠনটি।
তিনি বলেন, “এসব কর্মসূচিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশীয় ও অটোম্যাটিক অস্ত্রে ফায়ারিং করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর প্রমাণাদি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রয়েছে।”
উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যেই চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা। এ প্রসঙ্গে সেনা কর্মকর্তা বলেন, “উৎসব যাতে স্বতস্ফূর্তভাবে উদযাপিত হয়, তার জন্য আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।” তিনি ইউপিডিএফকে দেশের স্বার্থে অবরোধ প্রত্যাহার করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগের জেরে শুরু হওয়া অবরোধ এখনো পুরোপুরি প্রত্যাহার হয়নি। যদিও সোমবার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হয়, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ কার্যত অচল। ফলে শতাধিক মালবাহী ট্রাক আটকে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এদিকে ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারায় সহিংসতায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হন, আহত হন সেনা কর্মকর্তাসহ বহু পাহাড়ি ও বাঙালি। রামসু বাজার এলাকায় ব্যাপক অগ্নিসংযোগে বহু ঘরবাড়ি ও অফিস ভস্মীভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
খাগড়াছড়ি শহর ও গুইমারায় অধিকাংশ দোকানপাট এখনো বন্ধ। সীমিত সংখ্যক ইজিবাইক চললেও রাস্তায় কড়া নিরাপত্তা। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর ও গুইমারা উপজেলায় জারি আছে ১৪৪ ধারা। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, অবস্থা স্বাভাবিক হলে এ নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে।
এদিকে সোমবার রাতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ছয় সদস্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে তারা আট দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তবে অবরোধ প্রত্যাহার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।