আওয়ামী লীগের কেউ যাতে জামিন না পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে 

 
দেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কেউ যাতে সহজে জামিন না পান, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এসময় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করছেন- সাংবাদিকদের এমন তথ্যের প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা বলেন, “চট্টগ্রামে না শুধু, আজকে ঢাকায়ও মিছিল হয়েছে। তাদের (মিছিলকারী) অনেককে কিন্তু আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আইনের আওতায় আনার পরেও অনেকে জামিন পেয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি এরা যেন আর সহজে জামিন না পায়, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”

তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, প্রচুর মিছিল হবে। কিন্তু এই মিছিল তখন হবে না। তখন সবাই মিছিলের জন্য বেরিয়ে যাবে, অনেক মিছিল হবে কিন্তু এখন যারা ছোটখাটো মিছিল করে এগুলো হবে না।”

নির্বাচনে তিন বাহিনীর ১ লাখের মত সদস্য:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক লাখের মত সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্য থাকবে বলে জানিয়েছে  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সবাই কিন্তু এবার ইলেকশনে থাকবে। এখন মাঠে ত্রিশ হাজারের মত সেনাবাহিনী আছে, ওই সময় কিন্তু এক লাখের মত সেনাবাহিনী থাকবে, নেভি থাকবে, এয়ারফোর্স থাকবে। আর পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কোস্ট গার্ড ও র‍্যাব তো আছেই।”

মতৈক্য হলে সুবিধা:

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনটা তো শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। নির্বাচন নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ হল এখানে প্রধান। জনগণ যদি নির্বাচনের মাঠে নেমে যায়, তাহলে কেউ কিন্তু আর আটকাতে পারবে না। আর রাজনৈতিক দলগুলো, তাদের মধ্যে যদি একটা মতৈক্য হয়ে যায়, তাহলে সবার সুবিধা হয়।”

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী হুমকি কিনা:

সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সজাগ আছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া। যত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিতে পারব, তত তাড়াতাড়ি আমাদের সমস্যা সমাধান হবে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, “মিয়ানমারের সেনাবাহিনী  এখন আর বর্ডার এলাকায় নেই। পুরোটা আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। এখন মিয়ানমারের আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। আমাদের এখানে আরএসও, আরসা রয়ে গেছে।”

সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালো কাজ করছে:

এমন তথ্য জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “তাদের (মিয়ানমার) যে অভ্যন্তরীণ সমস্যা, এগুলো অনেকসময় আমাদের ওপর এসে পড়ে। প্রতিবেশীর সমস্যা তো এসে পড়ে।

এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আরো বলেন, মিয়ানমারের আরাকান আর্মি বেঁচে আছে শুধু মাদকের ওপরে। প্রচুর মাদক আসে। আর মাদকের পরিবর্তে আমাদের দেশ থেকে যাচ্ছে চাল, সার, ওষুধপত্র ও আরও অন্যান্য জিনিস। আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো যেন যেতে না পারে।”

লুটপাট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে: 

এমন তথ্য জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার পরিবর্তনে লুটপাট হওয়া অস্ত্র কিছু কিছু উদ্ধার হচ্ছে, ইলেকশনের আগে আরও উদ্ধার হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিও খুব ভালো, তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গেছে।