বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

শিক্ষার্থী হয়েও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইমতি

প্রকাশ: ২১:৫১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২২:২৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিক্ষার্থী হয়েও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইমতি

রংপুর শহরে একটি ঘটনা নিয়ে এখন চলছে তুমুল আলোচনা। স্থানীয় হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকায় পড়াশোনা করা এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী—ইমতিয়াজ আহমদ ইমতি। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সাবেক আহ্বায়ক। প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম ভেঙে সভাপতি হওয়ার পর এবার তার বিরুদ্ধে বেত দিয়ে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ৪ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় বহু শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ইমতিয়াজ। মোটরসাইকেলে চড়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর ফেল করা শিক্ষার্থীদের একে একে দাঁড় করিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক প্রহার করেন।

তারা জানান, একপর্যায়ে নবম শ্রেণির কক্ষে বেত ভেঙেও যায়।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী, শিক্ষকরা সেই সময়ে উপস্থিত থাকলেও ইমতিয়াজের ‘ক্ষমতার ভয়ে’ কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। মারধরে অন্তত ১০–১৫ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আইরিন আক্তারকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন ভর্তি থাকতে হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, নতুন সৃজনশীল প্রশ্ন ও পাঠ্যবই দেরিতে হাতে পাওয়ার কারণে পরীক্ষায় ফেল করা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু বিষয়টি না বুঝে সভাপতি গরু-পেটানোর মতো আচরণ করেছেন।

এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ইমতিয়াজ বড় নেতা। চাকরি খাওয়ার ভয়েই কিছু বলা হয়নি।”

অভিভাবকেরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি শাসন নয়—বরং শিক্ষার্থী নির্যাতন ও স্পষ্ট ফৌজদারি অপরাধ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইমতিয়াজ আহমদ ইমতি বলেন, “শিক্ষার্থীদের ভালো করার জন্যই একটু শাসন করেছি। ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোনও অভিযোগ নেই।”

তবে শাসনের নামে ‘শারীরিক নির্যাতন’ বৈধ কিনা জানতে চাইলে তিনি যুক্তি দেন, “আমি এলাকার বড় ভাই হিসেবে সামান্য রাগ দেখিয়েছি, ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।”

প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান ঘটনাটিকে গুরুত্বহীনভাবে দেখেছেন। তার দাবি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সম্মতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, শারীরিক শাস্তির অনুমতি নেই।

রংপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, “শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতনের সুযোগ নেই। এটি নিষিদ্ধ। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও বলছেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়ম ভেঙে শিক্ষার্থী হয়েও ইমতিয়াজ সভাপতি হয়েছেন, এখন সেই প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করছেন। ঘটনাটি শুধু একটি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রনেতাদের অনিয়ন্ত্রিত প্রভাবেরও প্রতিফলন। ক্ষমতা ব্যবহার করে নিয়ম ভেঙে দায়িত্ব পাওয়া এবং পরবর্তীতে সেটির অপব্যবহার সমাজে গভীর সংকটের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা
সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে বসছে ঐকমত্য কমিশন
আমি নিজেই পিআর বুঝি না : মির্জা ফখরুল
অক্টোবরে বাড়ছে ট্রিপ সংখ্যা রবিবার থেকে ১ ঘন্টা বেশি চলবে মেট্রোরেল
সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে সই করবে : আইন উপদেষ্টা
ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ অবরোধ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের
পুয়ের্তো রিকোর জালে মেসির আর্জেন্টিনার ৬ গোল
স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বিতর্কে তোলপাড়
চাকসু নির্বাচন অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ
রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের আগুন গার্মেন্টসের দ্বিতীয় তলা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনিসিপিকে প্রতীক নিতে হবে
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ভারতের ৩ কফ সিরাপ : ডব্লিউএইচও
আগামী রবিবার থেকে মাসব্যাপী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান শুরু