লালমনিরহাটে যত্রতত্র এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি, বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা
লালমনিরহাট সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১৮:৫৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লালমনিরহাট জেলায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার। জেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার—সবখানেই এখন অবাধে সিলিন্ডার কেনা-বেচা চলছে। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই এমন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক দোকানদার। ফলে যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাট-বাজারের চায়ের দোকানে চুলার পাশে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে। পান-সিগারেটের দোকান, খুচরা বাজারের দোকান, এমনকি হার্ডওয়্যার ও মুদি দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে এসব সিলিন্ডার। দোকানিদের কাছে নেই কোনো অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিলিন্ডার একসঙ্গে মজুদ থাকায় ক্রেতা ও আশপাশের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকেন।
খোর্দ্দ বামনডাঙ্গার বাসিন্দা নুর আলম জানান, “রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়। দোকানে সবসময় আগুন জ্বলে। অথচ কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। আমরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করি।”
অন্যদিকে হাতীবান্ধার এক দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা লাইসেন্স ছাড়াই ট্রাক থেকে মাল কিনে সিলিন্ডার বিক্রি করেন। ঝুঁকি সম্পর্কে তাদের সঠিক ধারণা নেই।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স লালমনিরহাট স্টেশন অফিসার রোকনুজ্জামান বলেন, “হাট-বাজারে দাহ্য পদার্থবোঝাই সিলিন্ডার কোনো নিয়ম ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে। এটি অবশ্যই একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, “লাইসেন্স ছাড়া সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধে আমরা কড়াকড়ি করেছি। নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ভবিষ্যতেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
সচেতন মহল মনে করে, এলপিজি সিলিন্ডার অতি দাহ্য পদার্থ। নিয়ন্ত্রণহীন বিক্রি চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও সচেতন হতে হবে। সাধারণ মানুষকেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী অনুমোদিত বিক্রেতার কাছ থেকে সিলিন্ডার কিনতে।
বর্তমানে গৃহস্থালি রান্না থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানি হিসেবে এলপিজির ব্যবহার বেড়েছে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীরাও সুযোগ নিচ্ছেন। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এ চাহিদাই সাধারণ মানুষের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত।