ফেনীতে জামায়াত কার্যালয়ে আগুন
এক যুগ পর মামলা, সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ দেড় শতাধিক আসামি
ফেনী সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১৭:৫৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফেনীতে জামায়াত কার্যালয়ে এক যুগ আগে হামলার সময় মোটরসাইকেলে আগুনের ছবি। ছবিটি সংগৃহীত
ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় এক যুগ পর অবশেষে মামলা হয়েছে। আলোচিত এই মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে আরও প্রায় দেড়শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান মামলাটি রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, জামায়াতের সাবেক দফতর সম্পাদক মো. শফিকুর রহমান বাদী হয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার নাম উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যাহ বি কম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, বর্তমান সমাজকল্যাণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, যুবলীগের সহ-সভাপতি জানে আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর আলম রানা। উল্লেখ্য, এদের একজন জাহাঙ্গীর কবির আদেল বর্তমানে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে শহরের শান্তি কোম্পানি রোডের আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসার উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থিত জামায়াতের অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে আসামিরা ভেতরে প্রবেশ করেন। এতে দারোয়ান প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। হামলাকারীরা অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
পরে গ্যারেজে থাকা নোয়া গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অফিসের এসি, কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিনসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। বিভিন্ন কক্ষের বইপত্র ও নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলার পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও শান্তি রোড অবরোধ করায় তারা আগুন নেভাতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
জামায়াতের জেলা প্রচার সম্পাদক আ ন ম আবদুর রহীম অভিযোগ করে বলেন, “সে সময় মামলাটি হলেও পুলিশ ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া এগোতে দেয়নি।”
অন্যদিকে, জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান বলেন, “আওয়ামী লীগ সারা দেশের মতো ফেনীতেও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাদের নির্দেশেই জামায়াত কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বইপত্র, গাড়ি, আসবাবপত্র ধ্বংস করা হয়েছে।”