সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অনিয়ম অনুসন্ধানে দুদক
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২০:৪২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৪:৩৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক পর্যায়ে আয়-ব্যয়ের খাতায় অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন অনুসন্ধানকারীরা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। দলটি বিভিন্ন ভাউচার, লগবই এবং আয়-ব্যয়ের নথি যাচাই করেছে।
অনুসন্ধান দল জানায়, পরিবহন, উন্নয়ন, ছাত্র সংসদ ও বিবিধ খাতের কাগজপত্র খতিয়ে দেখে একাধিক অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পরিবহন খাতের লখবইয়ে অনিয়ম ও গরমিল পাওয়া যায়।
তারা আরও জানায়, উন্নয়ন তহবিল থেকে জানালা, বেঞ্চ ও রেলিং মেরামতে কাঠ কেনা হলেও তার ব্যবহার প্রমাণ করতে পারেননি অধ্যক্ষ। মাস্টাররোল দেখালেও সেটি প্রশাসনিক অনুমোদনবিহীন এবং অস্বচ্ছ ছিল।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ
গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ খাত: বছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।
মাউশি মহাপরিচালকের আগমন: মাত্র এক অনুষ্ঠানে খাবার বাবদ দেড় লাখ টাকা বিল করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী পরিবহন খাত: বাস না থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ২৫০ টাকা করে প্রায় ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায়।
আইসিটি খাত: নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫০ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এক বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আদায়।
ফরম পূরণ: প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে সংগ্রহ, যা থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা আয় হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমি কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি। আয়ের টাকা নিয়ম মোতাবেক ব্যয় করা হয়েছে। শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।”
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানো হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে।
এদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মহলে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।