খেজুরের বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক-কর কমানোর সুপারিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:১৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫
রমজান ঘনিয়ে আসছে, আর সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে খেজুরের বাজার নিয়ে তৎপরতা। প্রতি বছর এই সময়টিতে খেজুরের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তবে এবার বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আগেভাগেই পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটি খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক-কর কমানোর সুপারিশ করেছে, যাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম সহনীয় থাকে এবং বাজারে পণ্যের সংকট না দেখা দেয়।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুট অ্যাসোসিয়েশন ও ইম্পোর্টার্সের তথ্য অনুযায়ী, রমজানে দেশে প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা তৈরি হয়। কিন্তু উচ্চ শুল্ক-কর এবং এলসি (ঋণপত্র) জটিলতার কারণে এবারের সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আমদানিকারকদের অভিযোগ, খেজুরের চাহিদা মেটাতে আমদানি বাড়াতে হলে শুল্ক ও উৎসে কর কমানো জরুরি। না হলে রমজানে বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন মোট ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ শুল্ক-করের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং উৎসে কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, “রমজানের আগে খেজুর নিয়ে যে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে, তা ভাঙা অত্যন্ত জরুরি। এবার যেহেতু নির্বাচনের সময়কাল, তাই সিন্ডিকেট সক্রিয় হওয়ার ঝুঁকি আরও বেশি।” তিনি প্রশাসনকে এখন থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, শুধু খেজুর নয়—রমজানের অন্যান্য আমদানি-নির্ভর পণ্য যেমন ছোলা, চিনি, মসলা, ডাল ও ভোজ্যতেলের বাজারও স্বাভাবিক রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নির্দেশনায়ও রমজানের পণ্য আমদানিতে এলসি খোলায় কোনো বাধা না দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ডলারের পর্যাপ্ত মজুত আছে, ফলে এলসি খোলায় সংকট হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বাজার স্বাভাবিক রাখা।
