১৪ মিনিটে ৪ গোল!
‘হারামবল ক্লাসিকো’য় আতলেতিকোকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:২৯, ২২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৩০, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আতলেতিকোকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল। ছবি: সংগৃহীত
ফুটবল বিশ্বে ‘হারামবল’—এই শব্দটি এসেছে নেতিবাচক, রক্ষণাত্মক ফুটবলের প্রতীক হিসেবে। এই ঘরানার সবচেয়ে বড় দূত আতলেতিকো মাদ্রিদ এবং তাদের কোচ দিয়েগো সিমিওনে। তাদের এই ধারা এতটাই কুখ্যাত যে, অনেকেই ঠাট্টা করে বলেন—“সিমিওনে ফুটবল নয়, হারামবল খেলান।”
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আর্সেনালও নাকি হাঁটছিল একই পথে—সেটপিসে অতিরিক্ত নির্ভরতা, দীর্ঘক্ষণ বল দখলে রাখলেও আক্রমণাত্মক ধারার অভাব। তাই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের আগে নাম পড়েছিল ‘হারামবল ক্লাসিকো’।
শেষ পর্যন্ত এই ‘ডার্বি’তে যা হলো, তা যেন সিমিওনের জন্য দুঃস্বপ্ন। মাত্র ১৪ মিনিটে ৪ গোল হজম করে আতলেতিকো মাদ্রিদ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত আর্সেনালের দাপটে।
খেলার প্রথম ৫৭ মিনিট পর্যন্ত দুই দলই প্রায় গোলশূন্য, রক্ষণাত্মক কৌশলে আটকেছিল একে অপরকে। ঠিক তখনই আর্সেনাল স্ক্রিপ্ট ভাঙে—ডেক্লান রাইসের ফ্রি কিক থেকে গ্যাব্রিয়েল মাগালায়েসের মাথা ছুঁয়ে বল জালে। এই গোলেই শুরু হয় আর্সেনালের ঝড়।
এরপর মাইলস লুইস-স্কেলির দ্রুতগতির পাসে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির বাঁকানো শটে আসে দ্বিতীয় গোল। গোল খরায় থাকা ভিক্টর ইয়োকেরেশ জটলার ভেতর থেকে গোল করে সাত ম্যাচের গোলখরা ভাঙেন, আর তিন মিনিট পর কর্নার থেকে গ্যাব্রিয়েলের অ্যাসিস্টে আবারও গোল করে নিজের ‘ব্রেস’ পূর্ণ করেন এই সুইডিশ ফরোয়ার্ড।
লিভারপুল কোচ আরনে স্লট ও ফুলহামের মার্কো সিলভা সম্প্রতি স্বীকার করেছেন—“সেটপিসে আর্সেনাল এখন ইউরোপের সেরা দলগুলোর মধ্যে।”
এই ম্যাচেও সেটপিস থেকে দুইটি নিখুঁত গোল প্রমাণ করল, আর্তেতার কৌশল কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।
রাইস এবং বুকায়ো সাকা—দুই দিক থেকেই উঠছিল ধারালো বল। রাইসের ফ্রি কিক ও কর্নার বলেই তৈরি হলো তিনটি গোলের সুযোগ। পরিসংখ্যান বলছে—২০২৩ সালের আগস্টে রাইসের অভিষেকের পর ইউরোপের পাঁচ লিগে ডেড বল থেকে তার চেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট আছে কেবল ইন্টার মিলানের হাকান চালহানওলুর (১১)। রাইসের সংখ্যা ১০।
এই মৌসুমে পেনাল্টি বাদে সেটপিস থেকে আর্সেনালের গোল দাঁড়িয়েছে ১০টি—যা প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ। নিউক্যাসলের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও সেটপিস থেকে গোল পেয়েছিল তারা। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন—“ট্রফি রেসে টিকে থাকতে এই অস্ত্রই এখন আর্সেনালের মূল ভরসা।”
আর্তেতার আর্সেনাল যেন ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে “দুর্দমনীয় মেশিনে”—যাদের শৃঙ্খলা, গতিময়তা ও ডেড বল দক্ষতা একসঙ্গে তৈরি করছে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ইউনিটগুলোর একটি।