সন্দেহ থেকে স্ত্রীকে হত্যা, লাশ ডিপ ফ্রিজে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:১০, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর কলাবাগানে স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন স্বামী নজরুল ইসলাম। হত্যার পরপরই আলামত গোপনের চেষ্টা করেন তিনি এবং মেয়েদের নিয়ে পালিয়ে যান। অবশেষে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে নজরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
এসময় মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহ ছিল, তার স্ত্রী তাসলিমা অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন এবং তার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই সন্দেহ থেকেই তিনি স্ত্রীকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
গত রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতে বাসায় ফিরে ফ্ল্যাটের দরজার দুটি লক খোলা দেখতে পান নজরুল। এতে সন্দেহ আরও গভীর হয়। এরপর গভীর রাতে, ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপান তিনি। হত্যার পর লাশ গামছা, চাদর ও ওড়নায় পেঁচিয়ে বাসার ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। এরপর রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে পরিষ্কার করেন এবং নিজের কাপড় ধুয়ে আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করেন।
পরদিন সকালে নজরুল বড় মেয়েকে জানান, তার মা “অন্য একজনের সঙ্গে পালিয়ে গেছে।” তখন বড় মেয়ে ঘরের দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। নজরুল মেয়েদের নানার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আদাবরের এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে দেন এবং প্রাইভেটকারে পালিয়ে যান।
সন্দেহ হলে নিহত তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন ও মেয়েরা পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ফ্ল্যাটে গিয়ে তালা ভেঙে প্রবেশ করে। এরপর ডিপ ফ্রিজের ভেতর থেকে চাদরে মোড়া তাসলিমার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় নজরুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। পরে বংশালের নবাবপুর রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “গ্রেপ্তারের পর নজরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। হত্যাকাণ্ডের পেছনে তার সন্দেহ ও দাম্পত্য কলহ মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।”