হঠাৎ পা ফুলে যাচ্ছে? শরীর কি কোনও মারাত্মক রোগের সংকেত দিচ্ছে?
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬:৩৭, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
পা, গোড়ালি বা হাঁটুর নিচের অংশ ফুলে যাওয়া অনেকেরই দৈনন্দিন সমস্যার মতো মনে হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি কখনও কখনও গুরুতর রোগের গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে অতিরিক্ত তরল রক্তনালীর ভেতর থেকে বেরিয়ে টিস্যুতে জমে গেলে এডিমা বা পা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
গরম আবহাওয়া, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা, জল কম খাওয়া—এসব স্বাভাবিক কারণেও ফোলাভাব হতে পারে। তবে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখলে এটিকে হালকা ভাবে নিলে চলবে না।
পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ
১) শিরার দুর্বলতা
পায়ের শিরা রক্তকে হৃদয়ের দিকে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হলে রক্ত নিচে জমে থাকে। এতে পা ভারী লাগে, চাপ দিলে দাগ পড়ে এবং ধীরে ধীরে ফুলে ওঠে।
২) হৃদযন্ত্রের সমস্যা
হার্ট দুর্বল হলে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয় না। এর ফলে শরীরের নিচের অংশে তরল জমে গিয়ে পা বা গোড়ালি ফুলে যেতে পারে।
৩) কিডনি বা লিভারের অসুস্থতা
এই দুটি অঙ্গ শরীরের তরল ব্যালান্স নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনি বা লিভারে কোনও জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত পা ফুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
৪) কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
রক্তচাপের ওষুধ, হরমোনাল মেডিসিন, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, স্টেরয়েড—এসব ওষুধ অনেক সময় পায়ের ফোলাভাব বাড়িয়ে দিতে পারে।
৫) লিম্ফ্যাটিক ব্লকেজ
লিম্ফনালী ব্লক হলে ‘লিম্ফেডেমা’ নামের দীর্ঘমেয়াদি ফোলাভাব দেখা দেয়। সাধারণত একবার শুরু হলে সহজে কমে না।
কখনই দেরি করবেন না—যে লক্ষণগুলো বিপদের ইঙ্গিত
নিচের কোনও একটি লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি—
ফোলাভাব দ্রুত বাড়তে থাকলে
শুধুমাত্র একটি পা ফুলে গেলে
ফোলা জায়গায় ব্যথা, লালভাব বা গরম অনুভব হলে
শ্বাসকষ্ট, বুকব্যথা বা মাথা ঘোরা দেখা দিলে
এগুলো রক্ত জমাট বাঁধা বা হার্ট–কিডনি–লিভারের গুরুতর অসুস্থতার পূর্বলক্ষণ হতে পারে।
কি করবেন? বাড়িতেই কিছু সহজ উপায়
প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটুন।
পা ঝুলিয়ে না রেখে একটু উঁচুতে রাখুন।
প্রয়োজনে কম্প্রেশন স্টকিং ব্যবহার করুন।
লবণ কম খান, কারণ লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন যাতে শরীর ডিহাইড্রেট না হয়।
