যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কড়াকড়ি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩:১২, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আশ্রয়প্রার্থী। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে আশ্রয় ও শরণার্থী সুরক্ষাব্যবস্থায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কড়াকড়ি আনতে যাচ্ছে কিয়ার স্টারমারের সরকার। অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও ইউরোপজুড়ে ডানপন্থী রাজনীতির উত্থান মোকাবিলায় শনিবার রাতে ব্রিটিশ সরকার নতুন আশ্রয়নীতি ঘোষণা করেছে, যা কার্যকর হলে হাজারো শরণার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তি পাঁচ বছরের জন্য শরণার্থী মর্যাদা পান; এরপর স্থায়ী বসবাস (ILR) ও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। নতুন নীতিতে এই সুরক্ষার মেয়াদ কমিয়ে আড়াই বছর করা হবে।
এ ছাড়া প্রতিটি আড়াই বছর শেষে শরণার্থীদের অবস্থা ‘পুনর্মূল্যায়ন’ করবে হোম অফিস। পরিস্থিতি নিরাপদ মনে হলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।
সরকার বলছে, আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিদের এখন থেকে দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য (ILR) আবেদন করতে অপেক্ষা করতে হবে টানা ২০ বছর। এর ফলে যুক্তরাজ্যে যুক্তিবদ্ধ ও নিশ্চয়তাপূর্ণ স্থায়ী জীবন গড়া আরও জটিল হয়ে যাবে।
ডেনমার্কের কঠোর আশ্রয়নীতির আদলে তৈরি পরিকল্পনাগুলোকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ বলেছেন, “আধুনিক সময়ে যুক্তরাজ্যের আশ্রয়নীতির সবচেয়ে বড় সংস্কার।”
তিনি স্পষ্ট করে জানান, এত দিন আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য থাকা ‘সোনার টিকিট’—সহজ স্থায়ী বসবাসের সুযোগ—এখন থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ।
যুক্তরাজ্যের রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন বলেন, এই কঠোর নীতি মানুষকে দেশটিতে আসার চেষ্টা থেকে বিরত রাখবে না, বরং শরণার্থীদের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোও সতর্ক করে জানিয়েছে—শরণার্থী সুরক্ষা অর্ধেকে নামানো হলে হাজারো মানুষের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হবে এবং যুক্তরাজ্যের মানবিক প্রতিশ্রুতি প্রশ্নের মুখে পড়বে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ সোমবার যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে নতুন নীতি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করবেন। সরকার আশা করছে, এই সংস্কারের ফলে অনিয়মিত অভিবাসন প্রবাহ কমে আসবে।
