সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

| ২৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নিপার জন্য অঝোরে কাঁদছেন মা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২:৫৪, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

নিপার জন্য অঝোরে কাঁদছেন মা

জরুরি বিভাগের করিডোরে পঁচিশ বছরের এক তরুণী নিপা। ছবি: সমাজকাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের করিডোরে গায়ের হাড় কাঁপানো শীত আর জীবনের অস্থির উষ্ণতা—দুটোই একসঙ্গে মিশে আছে। ১৪ নম্বর বেডের পাশে বসে আছেন এক মা। চোখে অনিদ্রার গভীর কালি, মুখে অবর্ণনীয় আতঙ্ক। তার সামনে শুয়ে আছে নিপা—মাত্র পঁচিশ বছরের এক তরুণী, যার জীবন এখন সমানভাবে দুলছে আশা ও মৃত্যুভয়ের দোলনায়।

নিপা শান্ত স্বভাবের, বুক ভরা স্বপ্নে বড় হওয়া এক মেয়ে। পড়াশোনা করবে, চাকরি করবে, মাকে দেখবে—এই ছিল তার ছোট্ট জীবন-পরিকল্পনা। কিন্তু ভাগ্য যেন নিষ্ঠুর নাটকের মতো সবকিছু উল্টে দিল একদিনে। হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা—তারপর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাওয়া। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে নির্মম সত্য—নিপার মাথায় জটিল ব্রেন টিউমার।

চিকিৎসকদের ভাষায়, “সময় খুব কম। জরুরি অপারেশন ছাড়া আর কোনো পথ নেই।”

অপারেশন খরচ ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা। কিন্তু এই টাকাই যেন এখন নিপার জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর বাধা।

নিপার বাবা বহু বছর হলো নেই। পরিবার বলতে মায়ের কাঁধেই পুরো পৃথিবীটা ছিল টিকে থাকা। মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করার প্রতিদিনের সংগ্রামে তার শরীরও ক্লান্ত। তবু মা কখনও হার মানেননি। কিন্তু আজ হাসপাতালের আলো-ছায়ার মাঝে তিনি হার মানছেন—টাকার কাছে, অসহায়ত্বের কাছে, সময়ের কাছে।

মেয়ের হাত ধরে তিনি শুধু বলেন, ‘মা, আমি পারি না… আমি আর কী করব?’

নিপা তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে, ‘মা, আমি একটু বাঁচতে চাই… তোমার পাশে থাকতে চাই।’

এই একটি বাক্যেই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় মায়ের হৃদয়। তিনি অঝোরে কাঁদেন—নিজের নয়, মেয়ের বাঁচার আকুতির জন্য।

হাসপাতালের প্রতিটি শব্দ যেন নিপার মায়ের বুকের ওপর ভার হয়ে নেমে আসে—স্ট্রেচারের শব্দ, নার্সের দ্রুত পায়ের আওয়াজ, অন্য রোগীদের আর্তনাদ… আর তার মাঝেই নিপা নিঃশব্দে শুয়ে আছে, ঠিক যেন জীবনের শেষ দ্বারপ্রান্তে।

কেবল টাকার অভাবে একটি মেয়ের জীবন থেমে যেতে বসেছে—এই সত্য বড় নির্মম। আমাদের সমাজে প্রতিদিন কত গল্প আসে, কত মানুষ সহায়তার অপেক্ষায় থাকে—কিন্তু নিপার গল্পটা এক অন্যরকম কষ্ট ছড়িয়ে দেয়। কারণ এখানে লড়াই শুধু মৃত্যুর বিরুদ্ধে নয়, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে, সময়ের বিরুদ্ধে, এক মায়ের নিঃশেষ কষ্টের বিরুদ্ধে।

নিপার চোখে এখনো আলো আছে—বাঁচার আলো।

তার মায়ের চোখে শুধু অনুরোধ—‘একটু সাহায্য করেন… মেয়েটাকে বাঁচাই।’
একজন অসহায় মায়ের সেই অনুরোধ যদি এক মুহূর্তের জন্যও আমাদের থামিয়ে দেয়, তবে হয়তো নিপার জীবন আবার আলোয় ফিরতে পারে।

যে কেউ চাইলে তার সামান্য সহযোগিতা দিয়েই একটি জীবন বাঁচানোর অংশ হতে পারে—একটি মেয়ের শেষ আশার আলো আবার জ্বালিয়ে দিতে পারে।

সহায়তার জন্য যোগাযোগ:
নিলুফা ইয়াসমিন, ঠনঠনিয়া, বগুড়া সদর
বিকাশ: ০১৩২৫-৫৫৮৮৬১
ইসলামিয়া ব্যাংক, বগুড়া সদর শাখা
হিসাব নম্বর: ২০৫০১১২০২০৬২৯৫১১৫

আপনার একটি সাহায্য—একটি জীবন। একটি আলো—একটি মায়ের অশ্রু থামানোর শেষ ভরসা।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

টিকিটবিহীন ২১০০ যাত্রী শনাক্ত, রেলওয়ের অভিযানে আদায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা
সৌদিতে প্রথমবার ধনী বিদেশিদের কাছে মদ বিক্রি শুরু
অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যৌথ ঘোষণা: ১ মাসের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা
জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ
পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমলো ৪০ টাকা
৮১ দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষককে নিবন্ধন দিল ইসি
১ জানুয়ারি থেকেই সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
বিএমইউয়ের গবেষণা রিপোর্ট; যথেচ্ছ ব্যবহারে অকার্যকর অনেক এন্টিবায়োটিক ওষুধ
১৬ ডিসেম্বর ৬৪ জেলায় বাজবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান
তফসিল ঘোষণার জন্য ১০ ডিসেম্বর বিটিভিকে ডেকেছে ইসি
আসিফ নজরুলের ‘মিথ্যে বনাম সত্য’
স্মারকলিপি নিতে ‘ভয়’! পেট্রোবাংলার মূল গেট ৪০ মিনিট বন্ধ
একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করছে: সালাহউদ্দিন
ট্রাইব্যুনালে ক্ষমা চেয়ে অব্যাহতি পেলেন বিএনপির ফজলুর রহমান
ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত
অনার্স–মাস্টার্স শিক্ষকদের জন্য সুখবর: নতুন নীতিমালা দেখুন
খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যানের তথ্য ‘অনুমাননির্ভর’: বিএনপি মিডিয়া সেল
বিটিআরসির আশ্বাসে মোবাইল ব্যবসায়ীদের অবরোধ স্থগিত
৫ বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৪২%
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ‘ব্যর্থ’: টিআইবি