নীল জগতে নারী ডাক্তার
অন্যরকম ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩:১৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০০:১৮, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ছিলেন বিখ্যাত ডাক্তার। ডাক্তারি ছেড়ে হলেন পর্নো তারকা। কী কারণে তার এই পেশা বদল? জানা গেল অনেক কষ্ট ছিলো তার। এ কারণেই তিনি নীল ছবির জগত বেছে নিয়েছেন। কে এই নারী ডাক্তার? কী এমন কষ্ট ছিলো তার?
ডেইলি মেইল জানায়, এই ডাক্তারের নাম চার্লি ফোর্ড। বাড়ি অস্ট্রেলিয়া এবং তার বয়স এখন ৩৬ বছর। ওই দেশের হাসপাতালে তিনি নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে ফিজিও থেরাপিস্ট ছিলেন। কিন্তু এই কাজ তার ভালো লাগেনি। তাই তিনি পশু চিকিৎসক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভর্তি হলেন ভেটেরিনারী স্কুলে। পশু চিকিৎসা বিদ্যায় তিনি স্নাতকও হন। তারপর তিনি ডাক্তার হিসেবে সরকারি হাসপাতলে কাজও করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। বদল করেন অনেক কষ্টে সফল হওয়া স্বপ্নের পেশা।

ডেইলি মেইলকে চার্লি ফোর্ড জানিয়েছেন, পশু ডাক্তার হিসেবে কাজ করার পাঁচ বছরে মধ্যেই তিনি এই পেশা ছেড়ে দেন। কারণ এই পেশায় কাজ করা খুব কঠিন ও ক্লান্তিকর। পশু চিকিৎসকরা কোনো বিশ্রাম পান না। তার উপর আয়ও নেই তেমন একটা। যে বেতন পান তাতে জীবন চালানোই দায়। তাই ৫০ শতাংশ চিকিৎসক স্নাতক হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যেই চাকরি ছেড়ে দেন। একদিকে অমানসিক পরিশ্রম, অন্যদিকে কাঙ্খিত বেতন না পাওয়ায় হতাশা থেকেই অনেকে আত্মহত্যা করেন। অন্যান্য পেশার চেয়ে এই পেশায় আত্মহত্যার হার ছয়গুণ বেশি, বলেন তিনি।
চার্লি তার পশুচিকিৎসা স্কুলে পড়ার সময়গুলোর কথা স্মরণ করেন, যেখানে তিনি সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করেছেন। তিনি বলেন, আমি স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য পরীক্ষায় ভালো গ্রেড পেতে অনেক কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম। লেখাপড়া চালিয়ে নিতে খুব অর্থ কষ্টে পড়ি। শেষে আর টিকতে পারছিলাম না। খরচ বহন করার জন্য কী করতে পারি, তা বের করার চেষ্টা করছিলাম। তখন কেউ একজন আমাকে পর্নো সিনেমায় অভিনয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি তখন তা কানেই তুলিনি।

পরে চার্লি চিন্তা করেন আমাকে ডাক্তার হতেই হবে। আর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কিভাবে বাড়তি আয় করা যায়, তা নিয়েও ভাবতে থাকেন। শেষে তিনি পর্নো সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ ডিগ্রি অর্জনের জন্য পর্নো সিনেমায় অভিনয় করা ছিলো তার বাড়তি আয়ের মাধ্যম।
চার্লি জানিয়েছেন, হাসপাতালে দীর্ঘসময় ডাক্তারদের কাজ করতে হয়। আমি হাসপাতালে সপ্তাহে ১৩০ ঘণ্টা কাজ করতাম। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আমি কাজ করতাম যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও রাতে আমাকে দুই ঘণ্টা করে কাজ করতে হতো। এজন্য বাড়তি কোনো সম্মানীয়ও পেতাম না।
পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো ঘুমানোর সময়ও পেতাম না। আমার চোখে সব সময় ঘুম থাকতো। দিনের পর দিন নির্ঘুম রাত কাটানোয় একদিন আমি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হই। আর তখনই বুঝলাম এই পরিস্থিতি বদলাতে হবে।
চার্লি প্রথমে অস্ট্রেলিয়ায় পর্নো ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। পরে তিনি ইউরোপে চলে আসেন। এবং ইউরোপের সবচেয়ে বড় পর্নো এজেন্ট মার্ক স্পিগলারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে সক্ষম হন।
এরপর তিনি পর্নো সিনেমার বড় তারকা হতে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
চার্লি জানান, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি ঠিক কিছু করছি। তাই আমেরিকার ভিসার আবেদন করি এবং তা পেয়েও যাই। বাকিটা ইতিহাস, তিনি বলেন।
পর্নো আমাকে এমন একটি জায়গা দিয়েছে, যেখানে আমি ইচ্ছেমৃত্যু, রাগান্বিত ক্লায়েন্ট এবং দুঃখী প্রাণিদের ছেড়ে দিতে পারি এবং পরিবর্তনের জন্য মজার কিছু করতেও পারি, চার্লি জানান।
পর্নোশিল্পী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি তার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থাও চালু করেছেন।
পর্নোশিল্পের অস্কার বলে পরিচিত এভিএন অ্যাওয়ার্ডসের জন্যও একাধিকবার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
চার্লি আরও জানান, আমি প্রযোজনা ও পরিচালনা পছন্দ করি। অভিনয়ও ভালোবাসি। তবে নতুন কিছু সৃষ্টি করতেই আমার বেশি ভালো লাগে।
চার্লি বলেন, নিজস্ব কোম্পানি চালানোয় তাকে তার ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে সাহায্য করেছে। তবে অন্যদেরকে তিনি তার মতো পর্নোশিল্পের জন্য ডিগ্রি ফেলে দিতে সতর্ক করেন।
আমি OnlyFans-এ ভালো করছি, কিন্তু OnlyFans-এ একজন মাসে গড়পড়তা ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারে।
কেউ যদি OnlyFans-এ পূর্ণকালীন কাজ করতে চায়, তাকে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে মার্কেটিংয়ে দক্ষ হতে হবে। আর টাকা আয়ের জন্য অর্থ ব্যয় করতে না পারলে তারা কখনও বড় অর্থ উপার্জন করতে পারবে না, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি এমন কিছু পশুচিকিৎসককে চিনি যাদের OnlyFans আছে এবং তারা খুব বেশি অর্থ উপার্জন করে না, যেখানে আমি একটু ভিন্ন বিভাগে আছি। কারণ আমি পর্নোশিল্পে নিজের একটি নাম তৈরি করেছি।
রয়েল কলেজ অব ভেটেরিনারি সার্জনস (RCVS) সম্প্রতি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তারা পশুচিকিৎসকদের
আত্মহত্যা কমানোয় মনোনিবেশ করেছে। কারণ এই হার সাধারণ জনগণের তুলনায় অনেক বেশি।

একজন 'প্রতিভাবান' পশুচিকিৎসকের মৃত্যুর পর এই স্বীকারোক্তিটি করা হলো, যিনি বিরক্ত হয়ে পোষা প্রাণিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ওষুধ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।
উইনচেস্টারের ৩৫ বছর বয়সী ডা. জন এলিস পোষা প্রাণির মালিকদের সাহায্য করার জন্য অর্থ প্রদান না করায় বিরক্ত হয়েছিলেন। একটি তদন্তকারী সংস্থার কাছে তিনি তার এই বিরক্তির কথা বলেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পশুচিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ডাক্তারদের আত্মহত্যা হ্রাস করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই যে কোনো মূল্যে ডাক্তারদের এই আত্মহত্যা বন্ধ করা জরুরি।
