বড় স্তনে বিশ্ব রেকর্ড

বড় স্তন তার খুব পছন্দ। তাই তিনি তার স্তনকে ইমপ্ল্যান্ট করে অনেক বড় বানিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। নাম লিখিয়েছেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড'স রেকর্ডসে। এই রেকর্ড অর্জন করতে স্তন সাতবার ইমপ্ল্যান্ট করে বিশাল সাইজ বানিয়েছেন।

একইসঙ্গে তিনি তার শরীরের রঙও বদলে ফেলেছেন। আগে ছিলেন শ্বেতাঙ্গ, এখন তিনি কৃষ্ণাঙ্গ।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি মেইল জানায়, মার্টিনা বিগের বাড়ি জার্মানিতে। তার বয়স এখন ৩৬ বছর। তিনি ২০১৭ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন শ্বেতাঙ্গের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ হওয়া ভালো। সেই ঘোষণার পর তিনি শরীরে মেলানোটান হরমোন ইনজেকশন নেয়া শুরু করেন। তখন তার স্তনের সাইজ ছিলো ৩২ ইঞ্চি, আর এখন ৫৬ ইঞ্চি। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, টাইটানিকের মতো বড় না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার স্তন 'পাম্প' করে যাবেন। তিনি আশা করছেন, বড় স্তন বানিয়ে তিনি আজীবন  বিশ্ব রেকর্ড করে যাবেন।

আন্তর্জাতিক এই গ্ল্যামার মডেল এবং তার স্বামী মাইকেল জন্মগতভাবে শ্বেতাঙ্গ ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে কেনিয়ার একটি গির্জায় ব্যাপ্তিস্ম গ্রহণ করেন। তখন তার নাম বদলে রাখেন মালাইকা কুবওয়া, যার অর্থ বড় দেবদূত।

স্বামী মাইকেলের সঙ্গে শ্বেতাঙ্গ অবস্থায় মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

সেই গির্জাটি একটি খুব বিপজ্জনক নদীর কাছে ছিলো। কারণ নদীতে তখন জোয়ারের অনেক তীব্রতা ছিলো, বলেছেন মার্টিনা।

ব্যাপ্তিস্ম গ্রহণের আগে মার্টিনা পাদ্রির কাছে দাবি করেছিলেন, ইউরোপের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বড় স্তনের অধিকারী। তাই ঐতিহ্যবাহী নিয়মে পাদ্রী তার ব্যাপ্তিস্ম না দিয়ে একটি বোতলে পানি সংগ্রহ করে তার মাথায় ঢেলে দেন।

মার্টিনা বিগের মাথায় পানি ঢেলে দিচ্ছেন পাদ্রী। ছবি: সংগৃহীত

পাদ্রী বললেন, তুমি খুব বিশেষ এবং আমি তোমাকে ব্যাপ্তিস্ম দিতে চাই, কিন্তু একটু ভিন্ন ভাবে।

স্বামী মাইকেলের সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ অবস্থায় মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

মার্টিনা বিগ ২০১৭ সাল পর্যন্ত একজন বিমানবালা ছিলেন। সেই সময় দ্য মাউরি শোর একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, কালো হওয়া ভালো। তার এই ঘোষণা তখন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলো।

মার্টিনা বিগ যখন বিমানবাল ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু মার্টিনা সেই সমালোচনা গায়ে মাখেননি। আট বছর ধরে শরীরে হরমোন ইনজেকশন নেয়ার পর তিনি একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীতে পরিণত হন। আর গায়ের রং বদলাতে খরচ করেছেন ৮৩ লাখ টাকা। 

মাইকেল যখন শরীরে মাঝারি রঙের ট্যান নিয়ে ফিরে আসেন, তখন মার্টিনা দাবি করেন যে বিশেষ ওষুধের তিনটি ডোজ তার ত্বকও কালো করে দেয়। ত্বক, চোখ, স্বর্ণকেশী চুল, এমনকি  তার ভ্রুর রংও বদলে দিয়েছিলো।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি মেইল মার্টিনার কাছে জানতে চেয়েছিলো, তিনি জন্মগতভাবে কালো পোশাক পরা লোকদের বিরক্ত করার বিষয়ে চিন্তিত কি-না। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, তিনি অনেক ইমেল পান, যারা আমার কালো রঙে অস্বস্তি বোধ করেন। আবার ভিন্ন চেহারা বানানোর জন্য অনেকে সাহায্য চান।

আমি জানি যে আমি কালো। এ-ও জানি কীভাবে জীবনযাপন করে সবার সাথে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হয়। 

কিন্তু আমার এমন লোক দরকার যারা কি ঘটছে তাতেই আগ্রহী। যদি তারা খুব রেগে থাকে, কেউ তাদের সাহায্য করতে পারবে না।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

মার্টিনা দম্পতি সম্প্রতি কেনিয়া ও নামিবিয়ায় তাদের অভিবাসন পরিকল্পনা শেয়ার করেছেন। কিন্তু এটা সহজ ছিলো না। যদিও তারা অনেক আফ্রিকান ভক্তদের কাছ থেকে তাদের দেশে বসতি স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন'।

দ্য সান জানায়, মার্টিনা ২০১২ সাল থেকে তার নাক ছোট করতে রাইনোপ্লাস্টি, পা লম্বা পা বানাতে লাইপোসাকশন, সুপার স্মাইলের জন্য ভেনিয়ার ও ঠোঁট ইমপ্ল্যান্ট করেছেন। সার্জারি করে অনেক বড় করেছেন নিতম্ব।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

এখন তিনি তার স্তন বড় করতে মেশিন দিয়ে নিয়মিত পাম্প করেন, যাতে প্রতিটি স্তন ইমপ্লান্ট করার পর ২,০০০ সিসি বা ২০ লিটার লবণাক্ত তরল ধারণ করে। 

যদিও স্তন ইমপ্ল্যান্টের আকারের সাধারণ মাপ ১২৫ সিসি থেকে ৬০০ সিসি পর্যন্ত। এর চেয়ে বড় করতে কাস্টম তৈরি ইমপ্ল্যান্টের প্রয়োজন হয়। 

মার্টিনা বলেন, তার ট্রান্সঅ্যাক্সিলারি ব্রেস্ট অগমেন্টেশন বা স্কারলেস ব্রেস্ট অগমেন্টেশন করা হয়েছে। বগলে একটি ছোট ছিদ্র করে স্যালাইন ইমপ্ল্যান্ট ঢোকানো হয়। আমি আমার স্তনের অনেক বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। আমার অনেক বড় স্তন ও সরু কোমর খুব পছন্দ, গর্বের সঙ্গে বলেন তিনি।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু এটাই আমার জন্য যথেষ্ট নয়! আমি আমার স্তন আরও বড় করতে চাই, যতক্ষণ না টাইটানিকের মতো বড় হয়।'

২০১৯ সালে ব্রিটেনের আইটিভির দিস মর্নিং শোতে মার্টিনা দর্শকদের বলেছিলেন, তার সন্তানরা কালো ত্বক নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে, যদিও তিনি ও তার স্বামী মাইকেল উভয়ই শ্বেতাঙ্গ।

উপস্থাপক হলি উইলোবি তখন জানতে চান, আপনার সন্তান কালো হবে?'

মার্টিনা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, ডাক্তার বলেছেন। বুকের দুধ খাওয়ানো এবং আমার জন্য সন্তান ধারণ করা নিরাপদ কি-না তা নিয়েও ডাক্তারের সাথে আলোচনা করেছি।

মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

পরে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেন, আমি এখন শারীরিকভাবে একজন কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা এবং আমার সন্তানরা কালো হবে, এটাই স্বাভাবিক।

তবে, টুইটারে দর্শকরা তার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, কোনও প্রসাধনী জেনেটিক্সকে প্রভাবিত করে না। আপনি যদি সাদা জন্মগ্রহণ করেন, তাহলে আপনার সন্তানরা সাদাই হবে। আমার মনে হয় মার্টিনার একজন নতুন ডাক্তার খুঁজে বের করা উচিত।

আমি স্পষ্টভাবে অনুভব করতে পারছি যে আমি কৃষ্ণাঙ্গ। কিন্তু এটি বর্ণনা করার জন্য সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া কঠিন, বলেন মার্টিনা। 

যেহেতু আমি আমার অস্ত্রোপচারগুলি অত্যন্ত সুক্ষভাবে করতে চাই, কিন্তু  আফ্রিকায় এমন কোনও সার্জনকে আমি চিনি না, যারা এগুলি সঠিকভাবে করতে পারেন। মার্টিনা আশা করছেন যে বাকি অস্ত্রপচারগুলোও সুন্দরভাবে করতে পারবেন।

স্বামী মাইকেলের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে মার্টিনা বিগ। ছবি: সংগৃহীত

মার্টিনা বলেন, আমি আমার সাদা রঙে অস্বস্তি বোধ করি। তাই যারা ব্যতিক্রমী ও ভিন্ন  চেহারা বানাতে চান, তাদের কাছ থেকে অনেক ইমেল পান।

শরীরের সাদা ও কালো রং মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে। সাদা মানুষ কৃষ্ণাঙ্গদের ঘৃণা করেন। আবার কৃষ্ণাঙ্গরাও শ্বেতাঙ্গদের হিংসা করেন। আমি উভয়ের মধ্যে বিভাজন দূর করে সমতা আনতে চাই, বলেন মার্টিনা।