নবনির্মিত ৮০টি হাসপাতাল ভবন ব্যবহারের অযোগ্য: বিশেষ সহকারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:১৩, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস’র নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
দেশে নবনির্মিত ৮০টি সরকারি হাসপাতাল ভবন এখনো ব্যবহারের অযোগ্য বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। জনবল ও বায়োমেডিকেল সাপোর্ট সংকটের কারণে এসব ভবন ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় আনা যায়নি বলে জানান তিনি।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ৫০০ শয্যার নতুন সম্প্রসারণ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য জানান।
এসময় বিশেষ সহকারী বলেন, নতুন ভবন নির্মাণই শেষ কথা নয়। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, নিরবচ্ছিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা ও জনবল স্থাপন না হলে উন্নত অবকাঠামোও অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত উচ্চমানের ভবনগুলোর বেশিরভাগই জনবল সংকট, অপারেশনাল ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণ দুর্বলতার কারণে বছরের পর বছর বন্ধ পড়ে আছে। এসব ভবনে উন্নত মানের মডুলার সিস্টেম থাকলেও প্রয়োজনীয় বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট না থাকায় সেগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
ডা. সায়েদুর রহমান সতর্ক করে বলেন, উন্নত চিকিৎসা ভবন চালানো শুধু সৌন্দর্য বা নির্মাণকৌশল দিয়ে হয় না—যদি বায়োমেডিকেল টিম ২৪/৭ ব্যাকএন্ড সাপোর্ট দিতে না পারে, তাহলে যন্ত্রপাতি কয়েক মাসেই অচল হয়ে যেতে পারে।
নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নতুন ভবনকে তিনি বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘বড় অর্জন’ বলে উল্লেখ করেন বিশেষ সরহকারী। তিনি বলেন, শুধু সেবাদান প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ না থেকে নিনসকে দেশের নিউরোসায়েন্স খাতের ‘গার্ডিয়ান প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে। মানদণ্ড নির্ধারণ, প্রটোকল উন্নয়ন, গবেষণা এবং স্থানীয় নিউরোলজিক্যাল সমস্যা সমাধানের কেন্দ্র হিসেবে এগোতে হবে।
এবছর সরকার জেনেটিক কেয়ার ও ইমার্জেন্সি কেয়ারকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো জেনেটিক মেডিসিন এবং ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু হচ্ছে—যা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আধুনিকায়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
নতুন ভবনের নকশা ও নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি স্থাপত্য অধিদপ্তর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বমানের অবকাঠামো নির্মাণে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এখন সক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে। তবে তিনি রক্ষণাবেক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে বলেন, যদি ব্যবস্থাপনা দুর্বল হয়, তাহলে নতুন ভবনও সেই ৮০টি ভবনের সারিতে চলে যেতে পারে।
আলোচনার শেষে তিনি নিনসকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিক সহায়তার আশ্বাস দেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভবনের কার্যকর ব্যবস্থাপনায় সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী গিয়াস উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।
