বিজয় দিবসে পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করবে ‘টিম বাংলাদেশ’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:২৪, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্যারাস্যুটিংয়ের জন্য ‘টিম বাংলাদেশের মহড়া। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ বছর এক ঐতিহাসিক আয়োজনের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো সর্বাধিক জাতীয় পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়তে যাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ টিম “টিম বাংলাদেশ”। স্বাধীনতার ৫৪ বছর উপলক্ষে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার আকাশে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে স্কাইডাইভ করবেন। এতে তৈরি হবে নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। প্রধান উপদেষ্টা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজয়ের দিবসের কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে তিন বাহিনীর পৃথক ফ্লাই-পাস্টের পর আকাশে উড়বে “টিম বাংলাদেশ”।
৫৪ জন প্যারাট্রুপার হাতে থাকবে ৫৪টি পতাকা—স্বাধীনতার ৫৪ বছরের প্রতীক। এই প্রদর্শনী জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সারাদেশে সেনা–নৌ–বিমান বাহিনীর বিশেষ আয়োজন, ঢাকার মতো অন্যান্য বড় শহরেও ফ্লাই-পাস্ট মহড়া, বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যান্ড-শো ও পুলিশ, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সমন্বিত সাংস্কৃতিক ব্যান্ড পরিবেশনা। সব আয়োজন উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিজয় মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা। এরমধ্যে থাকবে-৬৪ জেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা, শিশুদের রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, জেলা ও উপজেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচিতে সোহরাওয়ার্দীতে বড় আয়োজন।১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় অ্যাক্রোবেটিক শো, সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রাপালা “জেনারেল ওসমানী”।
১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে বিজয় দিবসের গান।৬৪ জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন,“চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে স্বাধীনতার গানগুলোই ছিল অনুপ্রেরণা। এবারের বিজয় দিবসে নতুন প্রজন্ম এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা পেতে যাচ্ছে—সোহরাওয়ার্দীর যাত্রাপালা, কনসার্ট, এয়ার শো এবং ৫৪টি পতাকায় ৫৪ প্যারাট্রুপারের জাম্প সবকিছুই মিলবে উৎসবে।”
বিশেষ কার্যক্রম—দেশজুড়ে উদ্যাপনের আমেজ :সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোকসজ্জা, জাতীয় পর্যায়ে একত্রিশবার তোপধ্বনি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, নৌবাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনী এবং সিনেমা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনা টিকেটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। এদিন জাদুঘর, বিনোদন কেন্দ্র ও শিশুপার্ক বিনা টিকেটে উন্মুক্ত।
মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব উপাসনালয়ে শহিদদের আত্মার শান্তি ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনায় বিশেষ প্রার্থনা। হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, পথশিশু কেন্দ্র ও বৃদ্ধাশ্রমে প্রীতিভোজ
সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন,“বিজয় দিবস আমাদের গৌরবের দিন। এবছর ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের উৎসবে দেশ মাতৃকাকে সম্মান জানানোই আমাদের লক্ষ্য।”
