যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘন ‘রেডিয়েশন ফগ’-এ বিপর্যস্ত ১৩ মি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩২, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
২০টি কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়েছে বিপজ্জনক ‘টুলে ফগ’; দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্য, পিএম২.৫ দূষণে ঝুঁকিতে বয়স্ক ও শিশু।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ ‘রেডিয়েশন ফগ’ বা ‘টুলে ফগ’। প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার জুড়ে থাকা এই ঘন কুয়াশায় শ্বাসজনিত সমস্যার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে এবং পরিবহন ব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় প্রায় ১৩ মিলিয়ন মানুষকে সতর্কতা ও এয়ার কোয়ালিটি অ্যালার্ট জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল ভ্যালির ২০টি কাউন্টিতে তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক আবহাওয়া পরিস্থিতি। রাতের তীব্র ঠান্ডায় মাটি দ্রুত শীতল হয়ে গেলে বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে আর্দ্র বায়ু আটকে যায়, আর সেখানেই ঘনীভূত হয় ‘রেডিয়েশন ফগ’। ভূপ্রকৃতি সমতল হওয়ায় এই কুয়াশা দীর্ঘসময় স্থির থাকে, যা স্থানীয়দের ভাষায় পরিচিত ‘টুলে ফগ’ নামে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফগ দূষণকে উপরে উঠতে দেয় না। ফলে বায়ুর মধ্যে আটকে যায় গাড়ির ধোঁয়া, শিল্পকারখানার নিঃসরণ ও পিএম২.৫–এর মতো সূক্ষ্ম কণা। এগুলো সরাসরি শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে হাঁপানি, বুককাঠিন্য, তীব্র কাশি ও চোখে জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে।
বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু এবং শ্বাসরোগীরা অত্যন্ত ঝুঁকিতে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) কুয়াশাটিকে ঘোষণা করেছে হাই ট্রান্সপোটেশন রিস্ক। দৃশ্যমানতা কয়েক মিটারেরও কম হওয়ায় মহাসড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে বহুগুণ।
২০০৭ সালের নভেম্বরের ভয়াবহ পাগল আপ দুর্ঘটনার কথা এখনও স্মরণ করেন স্থানীয়রা—১০৮টি গাড়ি পরপর ধাক্কা খেয়েছিল ঘন কুয়াশার কারণে।
বর্তমান পরিস্থিতিতেও মানুষের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজন হলে গাড়ির লো-বিম হেডলাইট, ধীরগতি এবং বাড়তি সতর্কতা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডেইলি মেইলের তথ্য অনুযায়ী, স্যাক্রামেন্টো, ফ্রেসনো, বেকার্সফিল্ড, ওকল্যান্ড, স্টকটনসহ বিভিন্ন শহরে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সরাসরি আক্রান্ত।
‘টুলে ফগ’ সাধারণত নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সবচেয়ে ঘন আকারে দেখা দেয় এবং মার্চে গিয়ে মিলিয়ে যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বাইরে বের হলে এন৯৫ মাস্ক ব্যবহার, অনাবশ্যক যাতায়াত এড়ানো, শিশু ও বয়স্কদের বাইরে যেতে নিষেধ, ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার চালু রাখা , গরম পোশাক ও পর্যাপ্ত পানি পানি খাওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে মানুষকে ঘরেই অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।
