সিসা দূষণ রোধে জাতীয় কৌশলপত্র চূড়ান্তের পথে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০৪, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত “মাল্টিসেক্টরাল স্টিয়ারিং কমিটি”-র সভা। ছবি: পিআইডি।
দেশে সিসা দূষণের কারণে তৈরি হওয়া নীরব জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় সরকার জাতীয় কৌশলপত্র চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত “মাল্টিসেক্টরাল স্টিয়ারিং কমিটি”-র সভায় খসড়া কৌশলপত্র পর্যালোচনা করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে স্ব স্ব কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
শিশু, শ্রমিকসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সিসার মারাত্মক প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে এ কৌশলপত্রকে একটি অপরিহার্য জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কৌশলপত্রের মাধ্যমে সারাদেশে সিসার সংস্পর্শ হ্রাস, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
কৌশলপত্রে পরিবেশে সিসার বিভিন্ন উৎস—সিসাযুক্ত রঙ, অনুমোদনহীন ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার, সিসাযুক্ত রান্নার সরঞ্জাম, খেলনা ও বিভিন্ন শিল্পজাত পণ্য—নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ই–রিকশাসহ ব্যাটারি–চালিত যানবাহনের দ্রুত বিস্তারের ফলে সৃষ্ট ই–বর্জ্যের প্রবাহকে গুরুতর পরিবেশগত ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার নির্দেশনাও খসড়ায় সংযোজন করা হয়েছে।
এই লক্ষ্য পূরণে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পাঠ্যক্রম সংশোধন, শিল্প নীতিমালা, শ্রম সুরক্ষা, পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রক্রিয়াকে একীভূত করে একটি সমন্বিত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করাই কৌশলপত্রের মূল উদ্দেশ্য।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান; উপসচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু; সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা সাবরিনা রহমানসহ স্বাস্থ্য, শ্রম, কৃষি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ। এছাড়া ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং পিওর আর্থসহ উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরাও সভায় অংশ নেন।
সভায় সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, “জাতীয় কৌশলপত্রটি চূড়ান্ত হলে দেশের শিশু ও শ্রমিকসহ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সিসার ক্ষতিকর সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে। এটি একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
