সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত–শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাতিলে নারীপক্ষের তীব্র প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:৫৩, ৪ নভেম্বর ২০২৫
						ছবি: সংগৃহীত
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগের পদ বাতিলের প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে নারীপক্ষ। সংগঠনটি বলেছে, সরকার অযৌক্তিক ও চাপানউতোরে নতি স্বীকার করেছে—এ সিদ্ধান্ত দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাতিল করে। এর আগে ২৮ আগস্ট প্রকাশিত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এ এই দুটি বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছিল।
নারীপক্ষ জানিয়েছে, কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মভিত্তিক সংগঠন এই বিধিমালার বিরোধিতা করে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবি তোলে এবং আন্দোলনের হুমকি দেয়। তারা অভিযোগ করে, সঙ্গীত শিক্ষা নাকি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে “ইসলামবিদ্বেষী” করে তুলবে—যা নারীপক্ষসহ বহু সাংস্কৃতিক সংগঠন সরাসরি অপপ্রচার হিসেবে নাকচ করেছিল।
নারীপক্ষ বলছে, সরকার প্রথম প্রজ্ঞাপনে সংস্কৃতিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তা ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু এখন নতুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার মৌলবাদী চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে—যা জাতির দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের পরিপন্থী।
বিবৃতিতে বলা হয়, সঙ্গীত ও শরীরচর্চা ধর্মবিরোধী নয়; বরং শিশুদের সংবেদনশীল, সংস্কৃতিমনা ও মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। নারীপক্ষ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে—তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষা বাধ্যতামূলক।
তাদের মতে, শরীরচর্চা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য; এটি স্বাস্থ্য, শৃঙ্খলা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। তাই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে এই দুটি বিষয় বাদ দেওয়া ভবিষ্যৎ নাগরিকদের পরিপূর্ণ বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে।
নারীপক্ষ বলেছে—“সরকারকে জনগণের কল্যাণে ও শিশুদের মানসিক–শারীরিক বিকাশে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের নাগরিক—তাদের বিকাশে সঙ্গীত ও শরীরচর্চা অপরিহার্য।”
সংগঠনটি সরকারের প্রতি অনতিবিলম্বে নতুন প্রজ্ঞাপন বাতিল করে পূর্বের ২৮ আগস্টের প্রজ্ঞাপন বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যথায়, নারীপক্ষ মনে করে, “জাতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এই ক্ষতির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।”
 
