পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহতের দাবি আফগানিস্তানের

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে নতুন করে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়েছে। আফগানিস্তানের হামলায় পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহত এবং আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তালেবান প্রশাসন।

সীমান্তে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনায় তিনটি পাকিস্তানি পোস্ট দখলের দাবি করেছে কাবুল। পাল্টা জবাবে ১৯টি আফগান পোস্ট দখলের দাবি ইসলামাবাদের।

রবিবার (১২ অক্টোবর) আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বার্তা সংস্থা টোলো নিউজকে জানান, কুনার ও হেলমান্দ প্রদেশে পরিচালিত অভিযানে ২০ জনের বেশি আফগান যোদ্ধাও নিহত বা আহত হয়েছেন। তবে আফগান বাহিনী পাকিস্তানের একটি বড় অস্ত্রভাণ্ডার দখল করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

পাকিস্তান এখনো এ দাবির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

শনিবার রাতে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইনায়াতুল্লাহ খোরাজমি জানান, পাকিস্তানের ‘বারবার সীমান্ত লঙ্ঘন’ এবং আফগান ভূখণ্ডে বিমান হামলার জবাবে আফগান বাহিনী ‘সফল প্রতিশোধমূলক অভিযান’ চালিয়েছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযানের সমাপ্তি ঘটে মধ্যরাতে।

তালেবান দাবি করেছে, তারা কুনার ও হেলমান্দ প্রদেশে তিনটি পাকিস্তানি সীমান্ত পোস্ট দখল করেছে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পিটিভি নিউজ জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী পাল্টা অভিযানে আফগানিস্তানের ১৯টি সীমান্ত পোস্ট দখল করেছে। প্রচারিত ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, আফগান পোস্টগুলোতে আগুন জ্বলছে এবং কুররম সীমান্তে কিছু তালেবান যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করছেন।

পাকিস্তানের রেডিও পাকিস্তান জানায়, সেনাবাহিনী তালেবানের মানোজবা ব্যাটালিয়ন সদর, জানদুসার পোস্ট, তুর্কমেনজাই শিবির ও খারচার দুর্গ ধ্বংস করেছে। তারা জানায়, সীমান্তের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থলগুলোকে ‘অত্যন্ত নিখুঁতভাবে’ টার্গেট করা হয়েছে।

অন্যদিকে আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, পাকিস্তানি বাহিনী সীমান্ত লঙ্ঘন করে বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি আফগান হামলাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আফগান বাহিনী বেসামরিক জনগণের ওপরও গুলি চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে নাকভি লেখেন, “পাকিস্তানের সাহসী সেনারা দ্রুত ও কার্যকর জবাব দিয়েছে। কোনো উসকানি বরদাশত করা হবে না।”

রেডিও পাকিস্তানের খবরে আরও বলা হয়, আফগান হামলার জবাবে পাকিস্তানি বাহিনী ‘তীব্র ও শক্তিশালী পাল্টা প্রতিক্রিয়া’ দেখিয়েছে। রাতে গোলাবর্ষণ ও আর্টিলারি ফায়ারে সীমান্তের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে।