বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে গোলাগুলি

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯:৩৫, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:০০, ১২ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে গোলাগুলি

আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে আফগান সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে দুই দেশের সেনারা ভারী অস্ত্রের গুলি নিক্ষেপে জড়িয়ে পড়ে বলে নিরাপত্তা সূত্রে জানিয়েছে আনাদোলু নিউজ এজেন্সি।

সূত্র জানায়, আফগানিস্তানের খোস্ত, নানগারহার, পাকতিকা, পাকতিয়া ও কুনার প্রদেশজুড়ে ভারী গোলাগুলি চলছে। কয়েকজন হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও নির্দিষ্ট সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, আফগান সীমান্তরক্ষীরাই প্রথমে গুলি চালায়।

এদিকে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিমান হামলার জবাবে তাদের বাহিনী পাল্টা অভিযান চালিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের দাবি, ডুরান্ড লাইনের বরাবর পাকিস্তানি নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সফল প্রতিশোধমূলক অভিযান চালানো হয়েছে, যা মধ্যরাতে শেষ হয়।

তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে পাকতিকা প্রদেশের মারঘা অঞ্চলে পাকিস্তানি বিমান হামলার অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও ইসলামাবাদ এখনো এ অভিযোগ অস্বীকার বা স্বীকার কোনোটিই করেনি। তারা বলছে, দেশের অভ্যন্তরে বেড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে পাকিস্তান, যার জন্য দায়ী আফগান ভূখণ্ডে আশ্রিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।

অন্যদিকে আফগানিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কখনোই নিজের ভূখণ্ড অন্য দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না।

সংঘর্ষের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমান্ত এলাকার বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ভারী কামান ও গোলার শব্দ শোনা যায়। তবে এসব ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি আনাদোলু।

কূটনৈতিক টানাপড়েনের পটভূমিতে উত্তেজনা

এই সংঘর্ষ এমন এক সময় ঘটছে, যখন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারতের সফরে আছেন। তিনি দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরে উত্তর প্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দ ও বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

মুত্তাকি ও জয়শংকর এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন, যেখানে ভারতীয় মন্ত্রী কাশ্মীরের পাহালগামে এপ্রিল মাসের হামলায় আফগানিস্তানের নিন্দা প্রকাশের প্রশংসা জানান। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চার দিনের সংঘর্ষের জন্ম দেয়।

এ ঘটনায় পাকিস্তান কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যৌথ বিবৃতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাব ও কাশ্মীরের আইনগত অবস্থানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

দুই প্রতিবেশী দেশের এই সামরিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন