ফ্রান্সে বাজেট কাটছাঁটের বিরুদ্ধে রাস্তায় লাখো মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৩৪, ২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৩২, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ফ্রান্সে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে আসন্ন বাজেট কাটছাঁটকে কেন্দ্র করে। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দেশজুড়ে অন্তত ২৪০টি স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী প্যারিস থেকে শুরু করে ডিজঁ, মেটজ, পয়তিয়ে ও মন্টপেলিয়ার শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। সংগঠিত বিক্ষোভগুলোতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষক, রেলকর্মী, স্বাস্থ্যসেবার কর্মী, ফার্মাসিস্টসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ফ্রান্সের কট্টরপন্থী সিজিটি ইউনিয়ন এবং বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন সিএফডিটি’র নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—সরকার যদি সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় কমানো বা ধনীদের কর ছাড় অব্যাহত রাখার মতো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তারা তা মানবেন না।
সিজিটি মহাসচিব সোফি বিনে বলেন, “প্রথমেই আমরা জানতে চাই সরকার কারা হবে… এরপর বাজেট কেমন হবে। বাজেটে পশ্চাদপসরণ হলে আমরা অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যান করব।”
ইউরোজোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ফ্রান্স বর্তমানে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আনার চাপে রয়েছে। সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু এখনও মন্ত্রিসভা গঠন সম্পন্ন করেননি, তবে তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ২০২৬ সালের বাজেট পাস করানো। গত বছর ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি ছিল ইইউর নির্ধারিত ৩ শতাংশ সীমার প্রায় দ্বিগুণ। এর আগে বাজেট সঙ্কোচন পরিকল্পনার কারণে তার পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বাইরু সংসদে অনাস্থার মুখে পদচ্যুত হন।
প্রতিবাদের প্রথম দিনেই প্যারিসে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত একই ধরনের বিক্ষোভে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডজনখানেক উচ্চ বিদ্যালয় অবরোধ করেছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো ঘোষণা দিয়েছেন, এবার বিক্ষোভ ঘিরে ৭৬ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শুধু প্যারিস অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে অন্তত ৫,০০০ পুলিশ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বাজেট ঘাটতি কমানোর প্রয়োজনীয়তায় একমত হলেও এর পথ ও পদ্ধতি নিয়ে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে। লেকর্নুকে সংসদীয় সমর্থন জোগাড় করতে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে ইউনিয়নগুলো আরও বৃহত্তর বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অর্থাৎ, ফ্রান্সে আসন্ন বাজেট কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার নতুন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে।