চাল নিয়ে ‘চালবাজি’
খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার ব্যক্তিগত হিসাবে কোটি টাকা লেনদেন
এম, এ, আযম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:৫৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০২:৩৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহ ও বিতরণের নামে কোটি কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই কর্মকর্তার সিন্ডিকেট চালবাজির কারণে সরকারি কর্মসূচি ভেঙে পড়ছে, আর সাধারণ মানুষ নিম্নমানের চাল পাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে রৌমারী খাদ্য গুদামে যোগদানের পর থেকেই শহীদুল্লাহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ও চাল সংগ্রহ, নিম্নমানের চাল গুদামজাতকরণ, ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে চাল বিতরণে প্রভাব খাটানো এবং ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে কোটি টাকার লেনদেন। তার আগের কর্মস্থল ঠাকুরগাঁও জেলার যাদুরানী খাদ্য গুদামেও একই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তবুও খাদ্য বিভাগ তার বিরুদ্ধে কখনও কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি।
রৌমারীর চালকল মালিক নাসির উদ্দিন লাল সম্প্রতি শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, “শামীম এন্টারপ্রাইজ নামে ভুয়া মিলের কাগজপত্র দেখিয়ে আমার ১০ টন চালের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।”
এ অভিযোগের পর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে বিরামপুরে বদলি করলেও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এখনো নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সোনালী ব্যাংক রৌমারী শাখার এক হিসাবে মাত্র এক মাসে ৮২ লাখ টাকা জমা-উত্তোলন হয়েছে।
২৫ মে: ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা
২ জুন: ২৭ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা
৩ জুন: ৩৩ লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন
এ ছাড়া ময়মনসিংহ সোনালী ব্যাংক শাখার অন্য এক হিসাবে ১ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
এ বিষয়ে শহীদুল্লাহ বলেন, “আমার ভাই গরুর ব্যবসা করেন। তাদের টাকা আমার হিসাবে লেনদেন হয়েছে। সরকারি কাজে কোনো অনিয়ম করিনি।”
তবে তিনি স্বীকার করেছেন সরকারি কর্মচারী হিসেবে এভাবে ব্যক্তিগত হিসাবে লেনদেন ‘ভুল হয়েছে’।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হামিদুল হক জানিয়েছেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন হাতে এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।