কলকাতায় আওয়ামী লীগ নেতাদের গোপন বৈঠকে যমুনা মার্চের পরিকল্পনা
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৩৪, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। ছবি: সংগৃহীত
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার প্রতিবাদে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার কথা ভাবছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। কলকাতায় গোপন বৈঠকে ‘যমুনামুখী মার্চ’ কর্মসূচির পরিকল্পনাও নিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার দিনই কলকাতায় থাকা নেতারা ওই বৈঠকে বসেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় দৈনিক দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গণমাধ্যমটি জানায়, গোপন বৈঠকটিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। দলের সভাপতির সঙ্গে ‘যমুনা মার্চ’ নিয়ে আলোচনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
‘Awami leaders in exile plan stir in Bangla’ শীর্ষক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি লিখেছে, নির্বাসিত আওয়ামী লীগের নেতারা দেশে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বৈঠকটি সোমবার (১৭ নভেম্বর) কলকাতার একটি অজ্ঞাত স্থানে হওয়ার কথা জানালেও সঠিক ঠিকানা প্রকাশ করেনি টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রসঙ্গে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকেই এটি ঠিক করা ছিল। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে বিচার বিভাগকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন ক্ষমতাসীনরা’।
রায় ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকার সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি বিবৃতিতে রায়কে আখ্যা দেন ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের বিচারের নামে প্রহসন’।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের জানান, খুব শিগগিরই তারা ঢাকায় ‘যমুনামুখী মার্চ’- এর বিষয়ে দলের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার ভাষায়, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এটি হবে অত্যন্ত কঠোর আন্দোলন’।
তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলা করা হয়েছে। আদালতের রায় তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত নয় বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বিচার প্রক্রিয়াটিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ হিসেবেও দেখছেন।
তারা অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অমীমাংসিত বিষয়গুলো পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করায় শেখ হাসিনাকে টার্গেট করা হয়েছে।
কলকাতার বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্য এক নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষের মনোনীত আইনজীবীদের আদালতে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকারও ক্ষুণ্ন হয়েছে। আদালত গঠনের কারণ ও বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
