প্রেস সচিবের দাবি
অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরে অর্জন করেছে নজিরবিহীন সাফল্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম সময়ে কোনো সরকার এত বড় সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, যতটা এই অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরে অর্জন করেছে।
শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তার দাবি, সরকার যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, তার অধিকাংশই তারা পূর্ণ করেছে।
তিনি স্বীকার করেছেন, সরকারের কাজকর্ম নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। বিশেষ করে ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০-রও বেশি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নতুন আইন প্রণয়নে জটিলতা এবং ছোট গোষ্ঠীর চাপের কাছে নতি স্বীকার করা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অদক্ষতা ও নিষ্ক্রিয়তার কথাও শোনা গেছে। তবে শফিকুল আলম এসব সমালোচনা উপেক্ষা করে বলেন, বাস্তবতা ভিন্ন এবং অন্তর্বর্তী সরকার দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি সরকারের সাফল্য হিসেবে যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, তার মধ্যে রয়েছে:
- শান্তি ও স্থিতিশীলতা: বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে শান্তি ফিরে এসেছে।
- মার্কিন শুল্কচুক্তিতে অগ্রগতি: কোনো লবিং ফার্ম ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
- রেকর্ড আইন প্রণয়ন: ১৫ মাসে রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কারও অন্তর্ভুক্ত।
- ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম: জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথনির্দেশনা তৈরি করেছে।
- বিচার বিভাগ শক্তিশালীকরণ: সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কঠিন।
- বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি: ইউরোপীয় শীর্ষ বন্দর লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগ চুক্তি, দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ইউরোপীয় বিনিয়োগ।
- পররাষ্ট্রনীতির নতুন কাঠামো: বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে স্থাপন।
- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: ব্যাংক খাতের লুটপাট কম, টাকা স্থিতিশীল, খাদ্যস্ফীতি ১৪% থেকে কমে ৭%।
- জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা: অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা।
- গুম ও রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান: জোরপূর্বক গুম বন্ধ ও রাজনৈতিক সহিংসতা-নির্ভর রাজনীতি নিষ্ক্রিয়।
- সংস্কৃতির জাগরণ: নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জনমত সৃষ্টি।
- নিরাপত্তা সংস্থার সংস্কার: র্যাব আইন মেনে কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বিরোধীদের হয়রানি কমিয়েছে, কোনো সাজানো ক্রসফায়ার ঘটেনি।
- মতপ্রকাশের স্বাধীনতা: সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে।
শফিকুল আলমের দাবি, এই অর্জনগুলো প্রমাণ করে যে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত।
