মা শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিবৃতি পোস্ট করলেন ছেলে জয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:২৯, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: সংগৃহিত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে দেওয়া রায় নিয়ে মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে সেই বিবৃতি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে আপলোড করেছেন।
ওই বিবৃতিতে এই রায়কে শেখ হাসিনা ‘একটি কারসাজিপূর্ণ ট্রাইব্যুনালের রায়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তার বিরুদ্ধে রায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য’ শীর্ষক এই বিবৃতিতে বলা হয়-
‘আমার বিরুদ্ধে যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, তা একটি কারসাজিপূর্ণ ট্রাইব্যুনালের রায়—যে ট্রাইব্যুনাল একটি অনির্বাচিত ও গণতান্ত্রিক বৈধতাহীন সরকারের দ্বারা গঠন ও পরিচালিত হয়েছে। এই রায় পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
‘মৃত্যুদণ্ডের যে বিদ্বেষপূর্ণ দাবিতে তারা মুখর, তা প্রমাণ করে যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে থাকা উগ্রপন্থী কিছু ব্যক্তি কীভাবে বাংলাদেশের শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে এবং আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’
‘ড. মুহাম্মদ ইউনুসের অরাজক, সহিংস ও সামাজিকভাবে পশ্চাদমুখী প্রশাসনের অধীনে যে কোটি মানুষ দিশেহারা, তারা এই সাজানো বিচার ও রায়কে দেখে প্রতারিত হবে না। তারা বুঝতে পারছে, কথিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) কখনোই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বা ২০২৫ সালের জুলাই–আগস্টের ঘটনাবলি সম্পর্কে সত্য উদঘাটনের জন্য গঠিত হয়নি। বরং এই ট্রাইব্যুনালের লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনুস ও তার মন্ত্রীদের ব্যর্থতা থেকে বিশ্ববাসীর নজর সরিয়ে নেওয়া।’
‘তার শাসনামলে জনসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অপরাধে জর্জরিত রাস্তাঘাটে পুলিশ কার্যত পিছু হটেছে, আর ন্যায়বিচার ব্যবস্থাকে করেছে বিপর্যস্ত—যেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ওপর হামলা ঘটলেও কোনো বিচার পাওয়া যায় না। হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বাড়ছে, নারীর অধিকার সংকুচিত হচ্ছে। প্রশাসনের ভেতরে হিযবুত তাহরীরসহ বিভিন্ন ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠীর প্রভাব বাংলাদেশের বহুদিনের ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্যকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।’
‘সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও ভয় দেখানো হচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে গেছে, আর ইউনুস আগেই নির্বাচন বিলম্ব করেছে—পরে আবার দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ করেছে।’
‘এসবই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং আইএমএফের মতো নিরপেক্ষ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের যাচাই করা তথ্য। এই প্রেক্ষাপটে আমি ইউনুসের অবশিষ্ট আন্তর্জাতিক সমর্থকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—বাংলাদেশের একজন নাগরিকও তাকে ভোট দেয়নি, এবং তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগও পায়নি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এই দেশের জনগণের হাতে, এবং আগামী বছরের নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে।’
