বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

| ১৫ কার্তিক ১৪৩২

১ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা করার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম

তাসকিনা ইয়াসমিন

প্রকাশ: ১২:৩৭, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

১ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা  করার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম

ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজন করতে হবে বলে জানিয়েছে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও প্রেস কনফারেন্সের সভাপতিআবুল বাসার ফিরোজ শেখ। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠান করেন একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার শাহ আলম। 

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মফিজুর রহমান লালটু। 

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, "আলবেয়ার বলেছিলেন, বই মানুষের এমন বন্ধু যা প্রতারণা করে না।"কিন্তু এবার বই প্রতারণা করতে যাচ্ছে। কিভাবে? সরকার ঘোষণা দিয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য এবার বইমেলা হবে না। তিনি বলেন, লেখক, পাঠক, প্রকাশকদের কাছে আমরা সুস্পষ্টভাবে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, একুশের বইমেলা জনগণের বইমেলা। জনগণের আকাঙ্খাকে পদদলিত করে আমাদের কোন শক্তি বইমেলাকে বন্ধ করতে পারবে না। 

কবি মোহন রায়হান বলেন, সালাম, বরকত, রফিক জব্বারের মতো প্রয়োজনে রক্ত ঢেলে দিয়ে আমরা বই মেলা রক্ষা করব। বন্ধুগণ সরকার বলেছে নির্বাচনের কারণে তারা নিরাপত্তা দিতে পারবে না। এদেশের জনগণকে কোন সরকার নিরাপত্তা দেয় না। যে সরকার জনগণের সরকার হয় না তারা টিকে থাকতে পারে না। আপনারা দেখেছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার এত বড় দম্ভোক্তি, হাসিনা পালিয়ে যায় না কিন্তু হাসিনা পালিয়ে গেছে। যদি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ না করেন আপনারা সরকারে থাকতে পারবেন না। নির্বাচন থাকবে নির্বাচনের যায়গায়। বইমেলা থাকবে বইমেলার যায়গায়। হ্যা কিছু মানুষ নির্বাচন করতে বাড়ি যাবে। ঢাকায় কি মানুষ থাকবে না? বরং আমি মনে করি বইমেলায়য় প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবে। আমরা বইমেলার পক্ষে থেকে, বাংলা একাডেমির পক্ষে থেকে তাদেরর জন্য সুযোগ তৈরি করে দেব। অমর একুশে বইমেলা যে বইমেলা ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, বইমেলা আমাদের জীবনকে বিকশিত করে। আমাদের সংস্কৃতির সেই বাতিঘর থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। আমরা যেকোন মূল্যে যেকোনভাবে আমরা সেটা করব। চার নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দিচ্ছি।আমরা ১ ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা করতে চাই। আমাদের লাশের উপর দিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা বন্ধ করতে হবে। তার বাইরে আর কিছু হবে না। 

এডর্ন প্রাকাশনীর প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, আমরা একুশে বইমেলা একুশের ফেব্রুয়ারিতেই চাই। 

উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, চার তারিখের মধ্যে বইমেলার ঘোষণা না এলে আমরা পাঁচ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাব এবং স্মারকলিপি দেব। 

কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আমাদের আজকের প্রতিবাদ থেকে আবারও ঘোষণা করতে চাই, আমরা কোনভাবেই ব্যর্থ হতে দেব না। যদি ব্যর্থ হয়, এটাকে এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। 

লিখিত বক্তব্যে শাহ আলম বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলাম অন্তর্বর্তী সরকার অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। সরকারের এরূপ সিদ্ধান্ত দেশের হাজার হাজার লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মীসহ ব্যাপক জনগণকে চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে। একুশের বইমেলা এদেশের মানুষের স্বাধীনতা-স্বাধীকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ। দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় তা আজ বিশ্বপরিসরেও প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচিতি লাভ করেছে। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়া সেই মর্যাদা ও গুরুত্বকে তুলে ধরে। একুশের বইমেলা জাতীয় পর্যায়ে এদেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল উৎসব। জাতি ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ শ্রেণী নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের জন্য বৈচিত্রপূর্ণ ও অসম্প্রদায়িক মিলনস্থল হিসাবে তা আজ খুবই জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বইমেলাকে ঘিরে ব্যাপক মানুষের অংশগ্রহণ ও স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতিতে এক আনন্দময় সাংস্কৃতিক পরিবেশ, সৃজনশীল কর্মতৎপরতা এবং উদ্দীপনাময় নানা আয়োজন সংঘটিত হয়ে থাকে। 

তিনি বলেন, আপনারা সকলে জানেন, বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশে একুশে বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই মেলা ব্যাপক সংখ্যক লেখক ও পাঠক তৈরীতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মেলা উপলক্ষ্যে যত পুস্তক প্রকাশিত হয়, বছরের অন্য সময়ে এমনকি সারাবছরে তত পুস্তক প্রকাশ হয় না। একুশের বইমেলা শুধুমাত্র বই কেনাবেচার মেলা নয়, এর সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, এই জনপদের মানুষের দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও স্বাধীকার-স্বাধীনতার সংগ্রামী চেতনা। দেশ-বিদেশের অগণিত লেখক, প্রকাশক এবং লক্ষ লক্ষ পাঠক একুশের বইমেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশীরা এমনকি অনেক বিদেশী নাগরিক বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় আগমনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। একুশে বইমেলার চিরাচরিত কর্মসূচির পরিবর্তনে তাই এধরনের বহু বিষয় ও ব্যক্তিগত সূচিরও বিপর্যয় ঘটবে।

তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা স্থগিতের কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষ জাতীয় নির্বাচন ও নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছেন। জাতীয় নির্বাচন দেশের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নাই, কিন্তু আমরা মনে করি নির্বাচনের পরিবেশ এবং আইন শৃঙ্খলার অজুহাতে কোন ক্রমেই একুশের বইমেলা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত নয়। বইমেলায় পাঠকের আগমন ও উপস্থিতি কোন ভাবেই নির্বাচনের পরিবেশে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেনা। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের নজির রয়েছে, পবিত্র রমজান মাসেও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে সময় বইমেলা স্থগিতের কোন ঘটনা ঘটেনি, প্রশ্নও উঠেনি। জাতীয়

 নির্বাচন দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়, আর বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার এক অতিক্ষুদ্র পরিসরে। সূতরাং নিরাপত্তার অজুহাতটি ধোপে টেকে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চুড়ান্ত তফসিল এখনো ঘোষিত হয় নি। একুশে বইমেলার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ধার্য্য হলে মেলা কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের দিন বইমেলা বন্ধ রাখতে পারেন। প্রয়োজনে নির্বাচনের আগের দিন এবং পরের দিনও বইমেলা বন্ধ থাকতে পারে। 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দেশবাসী গভীর বেদনার সাথে লক্ষ্য করছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে বইমেলার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জাতীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি করছে। তাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন, কর্মকাণ্ডের ধরণ ও উদ্দেশ্য নিয়ে ইতোমধ্যে জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাদের সাথে পরামর্শ করে কোন গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতে এ সকল আয়োজন করছেন তা ব্যাপক প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার। বর্তমান সংস্কৃতি উপদেষ্টা দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পর ফ্যাসিষ্ট বিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা সাংস্কৃতিক নেতা-কর্মীদের সাথে কোন আলোচনা বা পরামর্শ গ্রহণের প্রয়োজন বা তাগিদ বোধ করেন নি। যেমনিভাবে একুশের বইমেলার সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের (স্টেইক হোল্ডার) সাথে আলোচনা, পরামর্শ ছাড়াই মেলা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জনগণের জীবনের বিনিময়ে এবং গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে জনগণ এটা প্রত্যাশা করে না। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তথা সরকারের এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা, অপরিপক্কতা জনগণের জন্য খুবই দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় বটে। 

তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন। দীর্ঘসময় সরকার ও রাষ্ট্রের নিবর্তনমূলক আইন-কানুন ও অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে এবং জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে সোচ্চার থেকেছি। ফ্যাসিস্ট সরকার উচ্ছেদ আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করেছি। আমরা চাইনা বইমেলা স্থগিতের ইস্যুতে এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক যার কারণে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অথচ অনেক বড় পরিসরের বাণিজ্যমেলা আয়োজনে কোনো অসুবিধার কথা শোনা যায় নি। ফলে স্বাভাবিক ভাবে জনমনে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, বইমেলার মত মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার সৃজনশীল ক্ষেত্রটিকে সংকুচিত করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে সরকারের মধ্যে অবস্থানকারী সেই শক্তি সিদ্ধান্তটি নিয়েছে; যে শক্তি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও অসম্প্রদায়িক চেতনাকে গ্রহণ করতে পারে না, যারা জনগণের মাঝে সাম্প্রদায়িক, কূপ-মন্ডূক ও অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোজগৎ সৃষ্টি করতে চায় এবং স্বাধীনতার চেতনা ও আবহমান সংস্কৃতি বিরোধী। এই শক্তিই একুশের বইমেলা নস্যাৎ করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। 

একুশের বইমেলা স্থগিতের প্রতিবাদে এবং ঐতিহ্য অনুযায়ী যথারীতি ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজনের দাবিতে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের পক্ষ থেকে গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ বাংলা একাডেমির সামনে প্রতিবাদ-সমাবেশ ও একাডেমির মহাপরিচালক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান ও তার সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি, অন্যান্য প্রকাশক, লেখক, পাঠক, সংস্কৃতিকর্মীদের সাথেও একাধিক বৈঠক হয়েছে। সবশেষে গত ২৫ অক্টোবর ২০২৫ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে বইমেলার সাথে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সকল আয়োজনে উপস্থিত পক্ষসমূহ ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা আয়োজনের পক্ষে জোরালো মতামত প্রদান করেছেন। আমরা মনে করি, যে কোনো বিবেচনায় একুশে বইমেলা স্থগিত করার কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি অথচ সেটা নিয়ে সরকার পরিকল্পিতভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। এদেশের মুক্ত চিন্তার, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন জনগণ কখনোই তা হতে দিতে পারে না। 

আমরা প্রত্যাশা করি, অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও যথাসময়ে তা আয়োজনের ব্যবস্থা করে সরকার শুভবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পরিচয় দিবেন, লেখক পাঠক প্রকাশক সর্বোপরি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মনোযোগী হবেন এবং মহান একুশের সংগ্রামী, গৌরবময় ঐতিহ্য ও চেতনা সমুন্নত রাখতে ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। 

তিনি বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ৪ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যথাসময়ে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬ আয়োজনের সুস্পষ্ট ঘোষণার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মীসহ দেশের সচেতন, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সংগ্রামী জনগণ আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা আয়োজন করতে সরকারকে বাধ্য করবে। আমরা আশা করি, সরকার দেশের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও আবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলার আয়োজন করবেন।

দূর্ঘটনা ঘটলে দায় কে নেবে এ প্রশ্নের জবাবে লালটু বলেন, প্রতিদিন গার্মেন্টসে এত দূর্ঘটনা হয় কে নিরাপত্তা দেয়। এরশাদের আমলেও বইমেলা হয়েছে। 

ডিসেম্বরের মেলার কথা কারা বলল এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সরকার কার সাথে আলোচনা করে করেছে আমরা জানি না। 

বাংলা একাডেমির ডিজির সাাথে কি আলেচনা হয়েছে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তারা ঘটনাক্রমে বইমেলা করে। এখন বাংলা একাডেমির কিছু করার নেই। এটাই তারা বলেছে। আমরা পু্স্তক প্রকাশকদের সাথে কথা বলেছি। কঠোর কমসূচি কি হবে? এ প্রসঙ্গে বলেন, কঠোর কর্মসূচি কি হবে সেটা আমাদের পরিষদ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে। 

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমরা বাংলা একাডেমির সাথে কথা বলেছি।

মোহন রায়হান বলেন, আমরা চার তারিখ পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছি। যদি চার তারিখের মধ্যে তারা যদি ঘোষণা না দেন তাহলে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে, ৯০ এর গণ অভুত্থানে, দেশের সমস্ত আন্দোলনে যেভাবে দাবী আাদায় করা হয়েছে আমরাও সেভাবে সব পন্থা অবলম্বন করব।

কবি ও সংবাদিক হাসান হাফিজ বলেন, আমি তো মনে করি সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন দরকার। সরকারের কেন যেন সোজা আঙুলে ঘি উঠছে ন। সরকার কি করছে বুঝি না। তারা এক বছর ধরে নির্বাচন করতে পারছে না। ভয়ংকর দৈন্য অবস্থার পড়েছে। রোজায় কি অফিস আলাদত বন্ধ থাকে? মেলা হোক। সরকারকে আহৃবান জানাব সময় থাকতে মেলা হোক। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রগতি লেখক সংঘের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবি হাসান ফখরী, আলমগীর শিকদার লোটন, জাতীয় কবিতা পরিষদের কবিদের মধ্যে সংবাদ সম্নেলনে উপস্থিত ছিলেন , কবি লিলি হক, কবি কৌমুদী নার্গিস, কবি রফিক চৌধুরী, কবি টিমুনী খান রীনো, কবি সবুজ মনির, কবি তাসকিনা ইয়াসমিন, কবি ইউসুফ রেজা, কবি রোকন জহুর প্রমুখ। আবিষ্কার প্রকাশনীর প্রকাশক দেলোয়ার হাসান, সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস পান্নাসহ প্রায় শতাধিক সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী ও মুক্তচিন্তার মানুষ এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন