একজনের মোবাইল আরেকজন ব্যবহার করা যাবে না
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:১৫, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যাংকিং, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারি ও ব্যক্তিগত কাজ এখন অনেকটাই ফোনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে দেশের মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন নিয়ম কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এখন থেকে কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট বা ফোন যদি একজনের নামে নিবন্ধিত থাকে, তা অন্য কেউ ব্যবহার করতে চাইলে প্রথমে ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অর্থাৎ, নিবন্ধনকারী ব্যক্তির অনুমতি বা আনুষ্ঠানিকভাবে ফোন নিবন্ধন বাতিল না করলে সেই সিম বা হ্যান্ডসেট অন্য কোনো ব্যবহারকারীর কাছে স্থানান্তর করা যাবে না।
টেলিকম খাতের কর্মকর্তারা বলছেন, এই নতুন প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো সিম জালিয়াতি, বেআইনি ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা। তারা জানাচ্ছেন, অতীতে একাধিক ক্ষেত্রে চোরাই বা জালিয়াতি সিম ব্যবহার করে অর্থ বা তথ্য চুরি হয়েছে। তাই এই প্রক্রিয়া কার্যকর করলে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তবে ব্যবহারকারীদের অভিমত ভিন্ন। অনেকেই বলছেন, পরিবার বা বন্ধুর মধ্যে ফোন শেয়ার করা প্রচলিত। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যদি একজনের নামে নিবন্ধিত ফোন অন্য কেউ ব্যবহার করতে চায়, তবে ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ছাড়া তা ব্যবহার সম্ভব নয়। এতে দৈনন্দিন জীবনে অপ্রয়োজনীয় জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে যারা শিক্ষার্থী বা আয় কমানো ছোট ব্যবসায়ী, তাদের জন্য এই প্রক্রিয়াটি বড় ধরনের অসুবিধা তৈরি করতে পারে।
ডিরেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি সাধারণত অপারেটরের শাখা বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়। ব্যবহারকারীকে ফোনের মালিকানা স্থানান্তরের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে ফোন বা সিমটি নতুন ব্যবহারকারীর নামে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও নতুন নিয়ম সিম জালিয়াতি ও অবৈধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্যকর, কিন্তু সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ভোগান্তি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যারা ফোন একাধিক ব্যবহারকারীর মধ্যে ভাগ করে ব্যবহার করেন, তাদের জন্য নিয়মটি এক ধরণের বাধা হিসেবে কাজ করবে।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পরামর্শ হলো: ফোন বা সিম হস্তান্তরের আগে ডিরেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষণ করা। এছাড়া অপারেটরদেরও ব্যবহারকারীদের জন্য আরও সহজ, দ্রুত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
ফলে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়ার এই নতুন নিয়ম দেশের টেলিকম খাতের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে, কিন্তু ব্যবহারকারীদের জন্য কিছুটা ভোগান্তি অনিবার্য। এই ব্যালান্স ঠিক রাখতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে আরও সচেতনতা এবং সহজ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি।
