আজ পুরুষের দিন
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪৩, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আজ ১৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। ছবি: সংগৃহীত
আজ ১৯ নভেম্বর আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। যদিও অনেকের কাছে এটি অপ্রয়োজনীয় বা হাস্যরসের বিষয় মনে হতে পারে, তবে এর গুরুত্ব কম নয়। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র—প্রত্যেক স্তরে একজন পুরুষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আজকের দিনটি সেই অবদানকে সম্মান জানানোর ও পুরুষদের ইতিবাচক দিকগুলো উদযাপনের দিন।
এ বছর দিবসটির থিম ‘সেলিব্রেটিং মেন অ্যান্ড বয়েজ’ বা ‘পুরুষ ও ছেলেদের উদযাপন’। এর মাধ্যমে পুরুষ ও ছেলেদের ভালো দিক, তাদের ইতিবাচক কাজ ও অবদানকে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, বিশ্বের অনেক দেশে আরেকটি বিষয়ও গুরুত্ব পাচ্ছে—‘সাপোর্টিং মেন অ্যান্ড বয়েজ’। অর্থাৎ পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য, চাপ, দুঃখ বা আবেগের বিষয়গুলোও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরও সমর্থন, সহানুভূতি ও ভালোবাসা প্রয়োজন।

পুরুষ দিবসের ইতিহাস ও সূত্রপাত
এই দিবসটি প্রথম শুরু হয় ট্রিনিডাড ও টোবাগোতে, যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল লিঙ্গভিত্তিক আলোচনায় ভারসাম্য আনা। শুধুমাত্র নারীর সমস্যাই নয়, পুরুষদের অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়েও সচেতনতা তৈরি করা।
পুরুষ রোজ নানা কাজ করেন, চাপ সামলান, কিন্তু নিজেদের দুঃখ-দুর্দশা প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় তা চাপা রাখেন। এর ফলে শরীর ও মন—দুইয়েরই ক্ষতি হয়। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস তাদের সেই নীরব সমস্যাগুলো তুলে ধরার একটি সুযোগ।
পুরুষ দিবস উদযাপনের প্রস্তাব প্রথম আসে ১৯৯৪ সালে। তবে এর ইতিহাস আরও পুরনো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’ নামে দিনটি পালিত হতো, মূলত পুরুষদের বীরত্ব ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে। ২০০২ সালে এটি ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’ হিসেবে পরিচিত হয়।
১৯৬০-এর দশক থেকে পুরুষ দিবস নিয়ে লেখালেখি শুরু হয়। ১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস দিবসটির গুরুত্ব প্রকাশ করেন। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস উদযাপন শুরু করলেও তা বেশি পরিচিতি পায়নি। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে পুরুষ দিবস পালন করা হবে। ১৯৯৯ সাল থেকে এটি নিয়মিত পালিত হয়ে আসছে।

পুরুষ দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
বর্তমানে এই উদ্যোগ ৮০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে যদিও মাত্র দুই বছর হলো দিবসটি আলোচনায় এসেছে, তবুও তা পুরুষদের অবদান ও মানসিক সুস্থতার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য ও আবেগিক সুস্থতা নিয়ে সাধারণত খুব কম আলোচনা হয়। আজকের দিনে আপনার পাশে থাকা পুরুষদের প্রশংসা করুন, তাদের মনের কথা জানুন, তাদের ভালো কাজের স্বীকৃতি দিন।
