‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপের পর এবার পোকাধরা অ্যান্টিবায়োটিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৩৫, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপ খেয়ে ভারতের মধ্যপ্রদেশে ২৪টি শিশুর মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ওষুধ কেলেঙ্কারিতে কাঁপছে রাজ্যটি। এবার সামনে এসেছে পোকাধরা অ্যান্টিবায়োটিকের ঘটনা। অভিযোগ, গ্বালিয়রের মোরার শহরের এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি শিশুকে দেওয়া হয়েছিল এমনই একটি নোংরা ওষুধ। সেই বোতলের ভিতরে জীবন্ত পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
চিকিৎসাধীন শিশুর মা বিষয়টি প্রথম লক্ষ্য করেন। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাচের সব অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক বোতল সিল করে দেওয়া হয়। হাসপাতালের মজুত রাখা ৩০৬টি বোতল নিরাপত্তার স্বার্থে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই ওষুধের নমুনা পরীক্ষার জন্য ভোপাল ও কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
ড্রাগ ইন্সপেক্টর অনুভূতি শর্মা জানিয়েছেন, “ওই মহিলা যে বোতলটি এনেছিলেন, তার সিল খোলা ছিল। তবুও অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেনেরিক ওই ওষুধটি মধ্যপ্রদেশেরই এক সংস্থা তৈরি করেছে।
অ্যাজিথ্রোমাইসিন সাধারণত শিশুদের সংক্রমণজনিত রোগে দেওয়া হয়। তবে এই ঘটনার পর প্রশাসন সজাগ হয়ে ওঠেছে। প্রাথমিকভাবে অন্য কোনো বোতলে পোকা পাওয়া না গেলেও বিষয়টি নিয়ে ড্রাগ কন্ট্রোল অথরিটি ও স্বাস্থ্য দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগেই মধ্যপ্রদেশে ‘কোল্ডরিফ’ সিরাপ খেয়ে অন্তত ২৪ শিশুর মৃত্যু হয়। একই সিরাপ থেকে পাঞ্জাব, রাজস্থান ও হরিয়ানাতেও শিশু অসুস্থতার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করে ‘কোল্ডরিফ’, ‘রেসপিফ্রেস টিআর’ এবং ‘রিলাইফ’ সিরাপের ব্যবহারে বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এই নতুন ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠেছে—ভারতের ওষুধ উৎপাদন ও মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার নিরাপত্তা কোথায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের মাননিয়ন্ত্রণে এখনই কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।