প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা বাতিলের দাবি নারীপক্ষের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৩৫, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করেছে। নতুন এ বিধিমালা শিগগিরই কার্যকর হতে যাচ্ছে। তবে বিধিমালায় নারীর জন্য পূর্ব নির্ধারিত কোটা কমিয়ে মাত্র ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। একইসঙ্গে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কেবল সরাসরি নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। আর প্রধান শিক্ষক পদের ৮০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করার কথা বলা হয়েছে।
নারীপক্ষ মনে করে, নতুন বিধিমালা নারী কর্মসংস্থানের সুযোগকে সীমিত করবে এবং তাদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। এতে শিক্ষকতা পেশায় নারীর অংশগ্রহণ হ্রাস পাবে এবং বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় মেয়েশিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ভর্তি ও উপস্থিতি কমে যেতে পারে।
সংগঠনটির মতে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী এখনো সামাজিক ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে আছে। এই অবস্থায় নারী কোটার এমন পরিবর্তন তাদেরকে এক অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলবে। ফলে দেশে নারী শিক্ষকের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
নারীপক্ষ মনে করে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষকরা কেবল পাঠদানই নয়, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে মেয়েশিক্ষার্থীরা নারী শিক্ষকের কাছ থেকে বেশি সহানুভূতি ও উৎসাহ পেয়ে থাকে। নারী শিক্ষকের সংখ্যা কমে গেলে এ নারীবান্ধব পরিবেশ ব্যাহত হবে, যা সরাসরি নারী শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। তবে নারীপক্ষ বলছে, প্রাথমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য কোটা ব্যবস্থা একটি কার্যকর নীতিগত পদক্ষেপ, যা গ্রামীণ ও প্রান্তিক নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে।
তাদের দাবি, এসব বাস্তবতা বিবেচনায় দ্রুত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ বাতিল করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারীবান্ধব কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে।