সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

| ২৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নিহত মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায়কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায়

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১:৫১, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

নিহত মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায়কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায়

রংপুরে তারাগঞ্জে খুন হওয়া মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায়। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের তারাগঞ্জে নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে নিহত হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায়কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় তার দান করা চাকলা শ্মশানে গার্ড অব অনার প্রদান করলে কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা রহিমাপুর গ্রাম।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নিহত দম্পতির মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে সমগ্র এলাকা।

গার্ড অব অনারের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনাব্বর হোসেন, তারাগঞ্জ থানার ওসি রুহুল আমিনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা। রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাহক্রিয়া সম্পন্ন হলে স্বজন, প্রতিবেশী ও সহযোদ্ধাদের কান্না গ্রামের পরিবেশ ভারি করে তোলে।

পরিবারের পক্ষ থেকে বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাত ১০–১৫ জনকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমার বাবা-মাকে শেষ বয়সে এসে খুন হতে হবে—কল্পনা করিনি। যারা জড়িত থাকুক, কেউ যেন ছাড় না পায়।”

বড় পুত্রবধূ কল্যাণী রানী শোক সহ্য করতে না পেরে বারবার মূর্ছা যান। জ্ঞান ফিরলেই বিলাপ করে বলেন, “কি দোষে তাদের হত্যা করল? আর কয়দিনই বা বাঁচতেন? খুনিদের বিচার চাই।”

স্থানীয় চেয়ারম্যান আফজালুল হক বলেন, যোগেশ চন্দ্র রায় ছিলেন অতি বিনয়ী ও দানশীল মানুষ। তার মৃত্যুতে গোটা ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তারাগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিজয়ের মাসে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে, নচেৎ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”

তারাগঞ্জ থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়ের মরদেহ সৎকার করা হয়েছে।”

স্থানীয়রা জানান, গ্রামের বাড়িতে সন্তানরা না থাকায় দুজনই একা বসবাস করতেন। যোগেশ চন্দ্র রায় ছিলেন উত্তর রহিমাপুর নয়াহাট মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ২০১৭ সালে অবসর নেন তিনি।

মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হাজারো মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স গ্রামে ঢুকতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে মানুষ—পুরো রহিমাপুর গ্রাম যেন শোকে নিমজ্জিত।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

টিকিটবিহীন ২১০০ যাত্রী শনাক্ত, রেলওয়ের অভিযানে আদায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা
সৌদিতে প্রথমবার ধনী বিদেশিদের কাছে মদ বিক্রি শুরু
অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যৌথ ঘোষণা: ১ মাসের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা
জাতীয় নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ
পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমলো ৪০ টাকা
৮১ দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষককে নিবন্ধন দিল ইসি
১ জানুয়ারি থেকেই সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
বিএমইউয়ের গবেষণা রিপোর্ট; যথেচ্ছ ব্যবহারে অকার্যকর অনেক এন্টিবায়োটিক ওষুধ
১৬ ডিসেম্বর ৬৪ জেলায় বাজবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান
তফসিল ঘোষণার জন্য ১০ ডিসেম্বর বিটিভিকে ডেকেছে ইসি
আসিফ নজরুলের ‘মিথ্যে বনাম সত্য’
স্মারকলিপি নিতে ‘ভয়’! পেট্রোবাংলার মূল গেট ৪০ মিনিট বন্ধ
একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করছে: সালাহউদ্দিন
ট্রাইব্যুনালে ক্ষমা চেয়ে অব্যাহতি পেলেন বিএনপির ফজলুর রহমান
ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত
অনার্স–মাস্টার্স শিক্ষকদের জন্য সুখবর: নতুন নীতিমালা দেখুন
খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যানের তথ্য ‘অনুমাননির্ভর’: বিএনপি মিডিয়া সেল
বিটিআরসির আশ্বাসে মোবাইল ব্যবসায়ীদের অবরোধ স্থগিত
৫ বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৪২%
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ‘ব্যর্থ’: টিআইবি