১৪ বাংলাদেশি জেলেসহ দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
শহিদুল ইসলাম, উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:৫৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২২:২৫, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলীয় এলাকা থেকে দুটি ফিশিং ট্রলারসহ ১৪ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এ ঘটনা ঘটে। পরে আটক জেলেসহ ট্রলার দুটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় জেলেরা জানায়, আটক হওয়া ট্রলার দুটি টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী ঘাটের আবুল কালাম ও সৈয়দ আলমের মালিকানাধীন। ১৪ জন জেলে ছিলেন এ দুটি ট্রলারে। তারা হলেন—মো. শফিক (৩২), নুরুল ইসলাম (৪৫), মো. রহিম (২৭), মো. সোহেল (৩০), আবু তাহের (৩৮), রফিকুল ইসলাম (৩৬), ইসমাইল হোসেন (৪১), মো. শহিদুল (৩৫), হাবিবুর রহমান (২৯), ইউসুফ (২৬), জসিম উদ্দিন (৩১), রায়হান (৩৪), রুবেল (৩৩) ও মো. সেলিম (৩৯)।
আরাকান আর্মি পরিচালিত ‘গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক’ নামের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি পোস্ট দিয়ে এই আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সেখানে আটক জেলেদের ও ট্রলারের ছবি প্রকাশ করা হয়। সংগঠনটি দাবি করেছে, বাংলাদেশের ট্রলার দুটি অবৈধভাবে মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরছিল।
টেকনাফ কায়ুকখালী ঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ বলেন, “আজ সকাল থেকে সাগরে থাকা বেশ কিছু ট্রলার ঘাটে ফিরছিল। এর মধ্যে দুটি ট্রলারসহ ১৪ জন জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।” তিনি আরও জানান, অনেক ট্রলার এখনো সাগরে রয়েছে, ফলে শঙ্কা আরও বাড়ছে।
ট্রলার মালিক মো. রফিক বলেন, “আরাকান আর্মি অতীতেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমানে আরও অনেক বাংলাদেশি জেলে তাদের হেফাজতে রয়েছে। বারবার জেলেদের ধরে নেওয়া আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন জানান, প্রশাসন বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী বঙ্গোপসাগরে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। জেলেদের আটক, নির্যাতন ও ট্রলার জব্দ করার পুনরাবৃত্তি তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বাংলাদেশি জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত সরকারি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
