আনোয়ার ইব্রাহিম ও ট্রাম্পের ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৪৪, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
৪৭তম আসিয়ান সম্মেলনের প্রান্তে ইতিহাস গড়লো মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। কুয়ালালামপুর কনভেনশন সেন্টারে রবিবার (২৬ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষর করেন নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা চুক্তিতে।
দীর্ঘ ১০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফের কোন চুক্তি হলো মালয়েশিয়ার। সর্বশেষ ২০১৪ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তৎকালীন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের মধ্যে ‘সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে “কৌশলগত ও সমন্বিত অংশীদারত্ব”-এর পর্যায়ে উন্নীত করা। চুক্তির ক্ষেত্র ছিল- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী অংশীদারত্ব ও জলবায়ু ও জ্বালানি সহযোগিতা।
রবিবারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আওতায় অর্ধপরিবাহী শিল্প, প্রযুক্তি বিনিয়োগ, নিরাপত্তা সহযোগিতা ও টেকসই জ্বালানি খাতে অংশীদারত্ব আরও জোরদার হবে।
একই অনুষ্ঠানে আনোয়ার ইব্রাহিম ও ডোনাল্ড ট্রাম্প যৌথভাবে থাইল্যান্ড–কাম্বোডিয়া শান্তি চুক্তিতেও সই করেন, যা আসিয়ান অঞ্চলের কূটনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত অ্যাডগার্ড ডি. কাগান জানান, ট্রাম্পের সফর মূলত বাণিজ্য শুল্ক, সরবরাহ শৃঙ্খল, বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা কেন্দ্রিক ছিল।
তিনি বলেন, “মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বিশেষ করে পশ্চিমা সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আমেরিকান কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের কারণে মালয়েশিয়ার ভূমিকাও কৌশলগতভাবে অপরিহার্য।”
১৯৫৭ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর দুই দেশ ২০১৪ সালে সম্পর্ককে উন্নীত করে ‘সমন্বিত অংশীদারত্বে’ (Comprehensive Partnership)। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ও বিনিয়োগকারী দেশ। ২০২৪ সালে দুই দেশের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩২৪.৯১ বিলিয়ন রিঙ্গিত, যা প্রায় ৭১.৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৈঠকের শেষে উভয় নেতা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতা, ন্যায্য বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
