ফ্রান্সে কন্যাশিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা
প্রথমবারের মতো কোনো নারীকে সর্বোচ্চ শাস্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:০০, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
ফ্রান্সে আলোচিত এক মামলায় আলজেরীয় বংশোদ্ভূত ২৭ বছর বয়সী নারী দাহবিয়া বেনকিরেড-কে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তিন বছর আগে মাত্র ১২ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী লোলা ড্যাভিয়েতকে ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যা করার অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ফ্রান্সের আইনে এটি ইতিহাসে প্রথমবার, যখন কোনো নারীকে সর্বোচ্চ শাস্তি) দেওয়া হলো। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অপরাধের নিষ্ঠুরতা ও শিশুটির প্রতি বর্বর আচরণ দেশের বিবেক নাড়িয়ে দিয়েছে।
২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্যারিসের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে লোলা ড্যাভিয়েতের মরদেহ প্লাস্টিকের বাক্সে ভরা অবস্থায় পাওয়া যায়। নিখোঁজের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই লোমহর্ষক ঘটনা প্রকাশ পায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে ড্যাভিয়েতকে দেখা যায় বেনকিরেডের সঙ্গে একই ভবনে প্রবেশ করতে। এরপর দু’ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত নারীকে একা ভারী লাগেজ বহন করতে দেখা যায়—যা পরবর্তীতে শিশুটির দেহ লুকানোর প্রমাণ হিসেবে পুলিশের হাতে আসে।
তদন্তে জানা যায়, শিশুটি শ্বাসরোধ ও ঘাড়ের চাপে মারা যায়, পাশাপাশি তার শরীরে বহু আঘাত ও কাটার চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে করোনারের রিপোর্টে এসব আঘাতকে মৃত্যুর সরাসরি কারণ ধরা হয়নি।
আদালতে বেনকিরেড স্বীকার করেন, তিনি শিশুটিকে তার বোনের অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে গিয়েছিলেন—যেখানে তিনি শিশুটিকে গোসল করানোর পর যৌন নির্যাতন ও সহিংসতা চালান, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ হয়। পরবর্তীতে তিনি দেহটি বাক্সে ভরে ফেলে রাখেন।
শুক্রবার রায় ঘোষণার সময় বেনকিরেড কেঁদে “ভয়াবহ অপরাধ করেছি” বলে স্বীকার করেন এবং বিচারকের সামনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তবে রায় পরিবর্তনের কোনো সুযোগ রাখেনি—কমপক্ষে ৩০ বছর কারাভোগের পরেই প্যারোলে মুক্তি বিবেচিত হতে পারে।
এই মামলাটি ফ্রান্সে শিশু নিরাপত্তা, নারীর অপরাধ প্রবণতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রশ্নে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। লোলা ড্যাভিয়েতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়,“এই রায় আমাদের সন্তানের প্রতি ন্যায়ের ক্ষুদ্র প্রতিফল হলেও, তার হারানোর বেদনা কোনোদিন পূরণ হবে না।”
