মহিলা পরিষদের উদ্যোগে প্রদর্শিত হলো একক নাটক ‘গোধুলিবেলায়’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮:৫২, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
মহিলা পরিষদের উদ্যোগে প্রদর্শিত হলো একক নাটক ‘গোধুলিবেলায়’। ছবি: সমাজকাল
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজন করল এক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত ৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় অভিনয়শিল্পী মোমেনা চৌধুরীর একক নাটক ‘গোধুলিবেলায়’।
নাটকটির রচনা করেছেন মোমেনা চৌধুরী নিজেই। নির্দেশনায় ছিলেন শামীম সাগর; আলোক পরিকল্পনায় ঠান্ডু রায়হান এবং সংগীত, মঞ্চ পরিকল্পনা ও পোস্টার নির্মাণেও দায়িত্ব পালন করেন শামীম সাগর।
‘গোধুলিবেলায়’ নাটকে মোমেনা চৌধুরী তুলে ধরেন একজন বৃদ্ধা নারীর নি:সঙ্গ জীবনের গল্প। মাতৃত্ব, পরিবার ও সামাজিক প্রত্যাশার আড়ালে চাপা পড়ে থাকা এক নারীর দীর্ঘদিনের ভাঙন, ক্ষরণ এবং অভ্যন্তরীণ লাঞ্ছনার বেদনাময় চিত্র ফুটে ওঠে তার অনবদ্য অভিনয়ে।
নাটকে আরও উঠে আসে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীর নিরন্তর বিচার-প্রার্থনার আর্তচিৎকার। দীর্ঘ সময় ধরে বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা তাকে ঠেলে দেয় আত্মহননের পথের দিকে। মৃত্যুর আগে মায়ের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে সে রেখে যায় বিচারের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ, যা পুরো মিলনায়তনে এক গভীর আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করে।
নাটকটির মাধ্যমে মোমেনা চৌধুরী তুলে ধরেন—সমাজে নারী ও কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা কী ভয়াবহভাবে চলমান এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি কীভাবে ভুক্তভোগীদের আরও অসহায় করে তোলে।
ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তির ধীরগতি, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, অপরাধীদের ক্ষমতার অপব্যবহার—সবই তুলে ধরা হয় নাটকটির বিভিন্ন দৃশ্য ও মনোলগে।
শুধু সভা–সমাবেশ নয়—সহিংসতা রোধে অপরাধীদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে সমাজ, রাষ্ট্র ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়বদ্ধতার ওপর জোর দেন মোমেনা চৌধুরী। তিনি জানান, নারীর নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের প্রশ্নে বাস্তব পরিবর্তন আনতে শক্তিশালী আইন প্রয়োগের বিকল্প নেই।
একক নাটক প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ, সম্পাদকমণ্ডলী, কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতি ও আলোচনায় নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সাংস্কৃতিক মাধ্যমের গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়।
