রোকেয়া রান , নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি মূল উদ্দেশ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:২৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ ০৬ ডিসেম্বর সকাল ৭টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শাহবাগ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো প্রতীকী দৌড় “রোকেয়া রান ২০২৫”।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং বিডি রানার্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই দৌড়ে অংশ নিয়েছেন প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণকারী, যাদের মধ্যে ছিলেন নারী অধিকারকর্মী, রানিং কমিউনিটির সদস্য, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন,“রোকেয়ার আহ্বানে—‘জাগো ভগিনীরা জাগো’—উজ্জীবিত হয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন প্রথা ভাঙার লড়াই করেছেন, আর তার সেই লড়াই আজও আমাদের পথ দেখায়।”
তিনি আরও বলেন, সমাজে নারীর অগ্রযাত্রাকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে এই রোকেয়া রান প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জনা গোস্বামী, অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার, শাহাজাদী শামীমা আফজালী শম্পা এবং সাবিকুন নাহার।
দৌড় শুরুর আগে রুট ও নিয়মকানুন বিষয়ে নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিউতি সবুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানার্স কমিউনিটির সদস্য মিঠুন এবং পাপ্পু।
কমিউনিটি দৌড় শেষে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি বলেন,“রোকেয়ার দর্শন আমাদের শিখিয়েছে যে ‘অবগুণ্ঠন ও অবরোধ’ নারীর ভবিতব্য নয়। আমরা সমাজের সব জায়গায় সমান মর্যাদার সঙ্গে ছুটে চলবো—এই দৌড় তারই প্রতীক।”
বাংলাদেশের প্রথম আয়রনম্যান ও বিডি রানার্সের অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত বলেন, রোকেয়ার চিন্তা ছিল দূরদর্শিতাপূর্ণ। পুরুষের অগ্রযাত্রায় নারীর অনুপ্রেরণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—যা আমাদের শিখিয়ে দেয় সমাজকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একসঙ্গে পথ চলতে হবে।
আয়রনম্যান, পর্বতারোহী ও বিডি রানার্স অ্যাকটিভিস্ট ইমতিয়াজ এলাহী বলেন,“এটি শুধু দৌড়ের অনুষ্ঠান নয়, বরং নারী মুক্তিকামীদের এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে আহ্বান করে।”
তিনি নারীর অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বক্তব্য শেষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে আয়রনম্যান মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত ও ইমতিয়াজ এলাহীকে ফুল ও প্রকাশনা দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। সম্মাননা প্রদান করেন সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
উপস্থিত ছিলেন বিডি রানার্সের অ্যাকটিভিস্ট ও সদস্যরা, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটির নেত্রীবৃন্দ, কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার।
