থাইল্যান্ডের নতুন পর্যটন উদ্যোগ
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য ফ্রি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট, বিশেষ নজর ভারতীয় পর্যটকদের দিকে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:০৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

থাইল্যান্ড তার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের জন্য বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য। এবার দেশটির পর্যটন ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ ঘোষণা করেছে— “বাই ইন্টারন্যাশনাল, ফ্রি ডোমেস্টিক ফ্লাইটস” স্কিম।
বিনামূল্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট
এই পরিকল্পনার আওতায় যারা আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে থাইল্যান্ডে ভ্রমণ করবেন, তারা পাবেন দুটি ফ্রি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। এর সঙ্গে থাকবে ২০ কেজি লাগেজ ভাতা। অতিরিক্ত ফ্লাইট নিলে একমুখী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৭৫০ বাহত এবং রিটার্ন টিকিট ৩,৫০০ বাহত।
সরকার এ কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ করেছে ৭০০ মিলিয়ন বাহত, এবং আশা করছে প্রায় দুই লাখ পর্যটক এ সুবিধা নেবেন। মূল লক্ষ্য হলো ব্যাংকক, ফুকেট ও ক্রাবির মতো অতিপর্যটিত জায়গা থেকে পর্যটকদের কম পরিচিত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া, যাতে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।
পর্যটনে বৈচিত্র্য আনতে কৌশল
গত কয়েক বছর ধরে থাইল্যান্ড চেষ্টা করছে পার্টি-কেন্দ্রিক ভাবমূর্তিকে বদলে পরিবারবান্ধব ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে। ভারতীয় পর্যটকদের জন্য এ কৌশল বিশেষভাবে কার্যকর হয়েছে।
তবে এখনও অধিকাংশ ভ্রমণকারী জনপ্রিয় শহর ও দ্বীপেই সীমাবদ্ধ থাকে। নতুন ফ্রি ফ্লাইট কর্মসূচি তাদের উৎসাহিত করবে চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, খাও সক জাতীয় উদ্যানসহ অজানা-অচেনা জায়গায় ভ্রমণে। এতে জনপ্রিয় গন্তব্যের ওপর চাপ কমবে এবং অপেক্ষাকৃত ছোট শহর ও গ্রামগুলো পর্যটনের সুফল পাবে।
মৌসুমি বৃষ্টি ও বিকল্প গন্তব্য
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর থাইল্যান্ডে মৌসুমি বৃষ্টির সময়। ফুকেট ও ক্রাবির মতো আন্দামান উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকে, ফলে সমুদ্রকেন্দ্রিক পর্যটন বিঘ্নিত হয়। এই সময়ে ভ্রমণকারীদের জন্য বিকল্প হতে পারে—
খাও সক ন্যাশনাল পার্ক: সবুজ রেইনফরেস্ট ও হ্রদের অপরূপ দৃশ্য।
চিয়াং মাই ও চিয়াং রাই: মন্দির, পাহাড় ও ঝরনার সৌন্দর্য।
কোহ সামুই: মৌসুমের শুরুর দিকে শান্ত সমুদ্র সৈকতের স্বাদ।
বৈশ্বিক প্রভাব
এই উদ্যোগ বৈশ্বিক পর্যটন নীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য বিনামূল্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ধারণা শুধু ভ্রমণকে আকর্ষণীয় করছে না, বরং ভ্রমণপিপাসুদের অচেনা অঞ্চল ঘুরে দেখার অনুপ্রেরণাও দিচ্ছে। এতে সতন্ত্র, টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ পর্যটন নিশ্চিত হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, থাইল্যান্ডের এ কৌশল অন্যান্য দেশকেও অনুপ্রাণিত করতে পারে পর্যটন শিল্পে নতুন ধরনের টেকসই মডেল চালুর ক্ষেত্রে।