‘গণহত্যা’ বা গণহত্যা বোঝার মূল ইন্ডিকেটর কী?
আজিজুর রহমান আসাদ
প্রকাশ: ১৩:২৬, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১৩, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আজিজুর রহমান আসাদ
‘গণহত্যা’ কী? ‘গণহত্যা’ বোঝার মূল ইন্ডিকেটর বা নির্দেশক হলো ৫টি, [১] নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে হত্যাকাণ্ড (হতে পারে জাতি, ধর্ম সম্প্রদায়, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক পরিচয় ইত্যাদি)। [২] তাদের মানবিক মর্যাদা অস্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দেওয়া (নিষিদ্ধ করা, বি-মানবিকায়ন ট্যাগ দেওয়া। ‘ফ্যাসিস্ট’, ‘খুনি’ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার)।
[৩] প্রশাসনিকভাবে আলাদা করে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা (বেআইনি গ্রেফতার, মামলা দেয়া, নিষিদ্ধ করা, সিস্টেমিক বা কাঠামোগত হত্যা)। [৪] সংগঠিত সহিংসতার পরিকল্পনা করে হত্যাকাণ্ড (পদ্ধতিগতভাবে বাড়িঘরে হামলা, সম্পদ লুট, কৃষিজমি ধ্বংস, অর্থনৈতিক জীবন ভেঙে দেওয়া)। [৫] এবং অবশেষে হত্যা/ধ্বংস/অনাহার/বহিষ্কারের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব মুছে দেওয়া। যখন একটি রাষ্ট্র বা সংগঠিত শক্তি ধারাবাহিকভাবে এই কাজ গুলো শুরু করে তখন সেটি গণহত্যার দিকে এগোচ্ছে বা ইতোমধ্যেই গণহত্যা চলছে।
২০২৪ সালের জুলাই আগস্টে পুলিশের গুলিতে, গোপন স্নাইপার গুলিতে এবং মৌলবাদী জঙ্গিদের সশস্ত্র (চাপাতি, আগ্নেয়াস্ত্র) প্রতিশোধ হামলায় পুলিশ হত্যা ও রাজনৈতিক দলের কর্মী নিহত হয়েছে। এটি ছিল রাজনৈতিক দাঙ্গায় হত্যা, যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রযোজনায়, আইএসআই এর তত্ত্বাবধানে এবং মৌলবাদী জঙ্গিদের সশস্ত্র সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে, রেজিম চেঞ্জের লক্ষ্যে। সাফল্য লাভ করেছে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের ও সুশীল সমাজের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে।
তবে, ২০২৪ এর আগস্টের পরে প্রতিদিন যে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে হচ্ছে; নদীতে লাশ ভেসে যাওয়া ও জংগলে লাশ পাওয়া যাচ্ছে, বিশেষ করে ‘আওয়ামী লীগ’ নামে একটি জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে উপড়ের পাঁচটি নির্দেশক দিয়ে আগস্ট পরবর্তী হত্যাকাণ্ড সমূহকে কি ‘গণহত্যা’ বলা যায়? ভাবুন।
“গণহত্যা (Genocide)” শনাক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক আইন, রাজনৈতিক বিজ্ঞান এবং গণহত্যা গবেষণায় কিছু স্পষ্ট ইন্ডিকেটর (নির্দেশক) ব্যবহৃত হয়। এই নির্দেশকগুলো UN Genocide Convention, ICC (Rome Statute) এবং বিভিন্ন গণহত্যা গবেষকদের (Gregory Stanton-এর “10 Stages of Genocide”) যৌথ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বামাতি, জামায়াতের দোসর, এবং এক বন্ধুর পোস্টে দেখলাম, ‘মগজ বিহীন বাম’ এরা চিন্তা করে জামায়াতের মতো, ফলে জামায়াতের ভাষায় কথা বলে। বিশেষ করে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিবেশী ভারত, শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ, আওয়ামী লীগ এবং জুলাই রেজিমচেঞ্জ নিয়ে এদের ভাষ্য জামাতি। এরা জামায়াতের ‘গণহত্যা’ শব্দটিকে অবলীলায় এদের শূন্য মগজে ভরে নিয়েছে।
লেখক: গবেষক
