সাগর-রুনি হত্যা তদন্তে আরও ৬ মাস টাস্কফোর্সকে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্সকে আরও ছয় মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ, রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, আর মামলার বাদী পক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত র্যাবকে তদন্ত থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে। এতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়। অন্যান্য সদস্য হিসেবে রয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও সদর দপ্তরের একজন করে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক এবং র্যাবের একজন পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
তবে অবকাশকালীন ছুটির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অগ্রগতি হয়নি। পরে ২২ এপ্রিল আদালত প্রথম দফায় আরও ছয় মাস সময় দিয়েছিল। এবার সেই সময়ের মেয়াদ শেষ হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ পুনরায় সময় বৃদ্ধির আবেদন করে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন। পরদিন সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিনই রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে তদন্তের দায়িত্ব ছিল থানার এক কর্মকর্তার হাতে। পরে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দায়িত্ব নেয়। কিন্তু তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে র্যাবের হাতে তদন্তভার যায়।
এরপর থেকে বারবার সময় বাড়ানো হলেও র্যাব কোনো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। আদালত তখন রুল জারি করে জানতে চেয়েছিল, সাগর-রুনি হত্যার আসামিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “২০১২ সালে আমরা যে রিট দায়ের করেছিলাম, তা এখনো চলমান। তদন্তের স্বচ্ছতা ও দ্রুততার জন্যই এখন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এত বছরেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়নি — এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
